ভুয়া পুলিশ সেজে সাবেক চেয়ারম্যানের টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সাবেক এক চেয়ারম্যানকে জোরপূর্বক এক নারীর সঙ্গে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই ও পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সোমবার ভুক্তভোগী বাদশা ফয়সাল (৪৫) তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দশমিনা গ্রামের বাসিন্দা প্রধান আসামি মো. রাইসুল ইসলাম রাসেল (৩৫) ও ৪ নং আসামি নরসিংদীর বাসাইল গ্রামের বাসিন্দা মো. আরিফ।

ভুক্তভোগী বাদশা ফয়সাল পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার খলিসাখালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলাধীন ২ নং আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

মামলার আসামিরা হলেন- মো. রাইসুল ইসলাম রাসেল (৩৫), মো. রাসেল (৪০), খোরশেদ (৩৫), নরসিংদীর বাসাইল গ্রামের মো. আরিফ (৩৫), মোজাম্মেল (৪০), দশমিনা উপজেলার খালিশাখালী গ্রামের মো. আজমল (৪৬), একই গ্রামের মো. সালাউদ্দিন (৪০)।

বাদশা ফয়সাল বলেন, চেয়ারম্যান থাকাকালে ১ নং আসামি রাইসুল ইসলাম রাসেল আমার নিকট থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিত। আমাকে মাঝে মধ্যে ফোন দিয়ে ঢাকা বেড়াতে আসতে বলতো। গত ১০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আসি এবং আমার শ্বশুরের বাসা যাত্রাবাড়ী থানাধীন মাতুয়াইল অবস্থান করি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে রাসেল আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে ঢাকায় দেখা করতে চায়। বিকেলে সে আমাকে তার বোনের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমি সেখানে যেতে রাজি হই।

তিনি বলেন, বিকেল আনুমানিক ৫টায় দিকে রাসেল আমাকে শনিরআখড়া শেখদী রপসী গার্মেন্টসের বিপরীত পাশে ৪ নং আসামি আরিফের বর্তমান ঠিকানায় রাশেদের বাড়ির ভাড়া বাসার নিচতলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় এবং আমাকে একটি কক্ষে বসতে দেয়। কিছুক্ষণ পর একটি অজ্ঞাত মেয়েসহ আসামিরা আমাকে অবরোধ করে। তাদের মধ্যে ৫ নং আসামি মোজাম্মেলের হাতে হ্যান্ডকাপ ছিল। সে নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেয়। অপর আসামিদের সহযোগিতায় মেয়েটিকে আমার পাশে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আপত্তিকর ছবি তোলে। আমি প্রতিবাদ করিলে আসামিরা আমাকে এলোপাতাড়ী মারধর করে এবং আমার কাছে থাকা ব্যক্তিগত মোবাইলটি রাসেল ছিনিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, পরে ৫ নং বিবাদী মোজাম্মেল আমার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে জোরপূর্বক ওই মেয়েটির সঙ্গে পুনরায় ছবি তোলে এবং ভিডিও ধারণ করে। পরে আমার কাছে থাকা নগদ ৬৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং আমার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী এবং ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে। আসামিরা আমার সঙ্গে থাকা মোবাইলের বিকাশ থেকে তাদের মোবাইলে বিকাশে মোট ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশআউট ও সেন্ডমানি করে নিয়ে নেয়। এরপর আসামিরা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এ ঘটনা পুলিশকে জানালে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকী দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়।

বাদশা ফয়সাল বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে আমি স্থানীয় ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে বাড়িতে চলে যাই। পরবর্তী সময়ে এলাকায় গণ্যমান্য লোকজন এবং আমার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারি আসামিরা বিভিন্ন ফেসবুক আইডি হতে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার জোরপূর্বক তোলা ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছে।

ভুক্তভোগী এ ঘটনায় জড়িত চক্রের সকল সদস্যকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।