চিতলমারীতে সড়কের বেহাল দশা,জনদূর্ভোগ

প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট)প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীতে অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। মাত্র ৬ থেকে ৮ মাস আগে কার্পেটিং করা সড়কগুলো এখন ভ্যান, নছিমন, ট্রাক ড্রাইভারদের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে নিত্য নতুন দুর্ঘটনা।

সংস্কারের অভাবে যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় অর্ধশত রাস্তা। এতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে এখানকার জনগণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজলার বাখরগঞ্জ বাজার গোদাড়া গেট পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের ৮ মাসের মাথায় যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই সবরকমের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চেয়ারম্যান মেম্বারদের বলেও কোন উপকার পাচ্ছেনা সড়ক এলাকার ১০/১২টি গ্রামের বাসিন্দারা।

দুর্গাপুর থেকে খাসেরহাট বাজার হয়ে কালিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়কটির অনেক জায়গায় বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি আটকে সেখানে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হয়। উপজেলার বৃহত্তম শবজী বাজার খাসেরহাট থেকে শবজী বোঝাই ট্রাক চরমভাবে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কোথাও কোথাও
ট্রাক আটকে পড়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। এতে ব্যপারীদের রোশানলে পড়ে শবজীর ন্যাজ্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চাষীরা।

অপর দিকে চিতলমারী থেকে বাবুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ওয়াবদায় বিভিন্ন স্থানে খালের দিকে ফাটল দেখা দিয়েছে। সদ্য সংস্কারিত এ রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের হাজার হাজার জনসাধারণ। তারা জানিয়েছেন এ সড়কটি সংস্কারের সময় ইঞ্জিনিয়ারদের তেমন দেখা যায় না। সড়কটি যে কোন সময় ধ্বসে গিয়ে যান চলাচলে সম্পূর্ন অনুপযোগি হয়ে পড়তে পারে তাই শক্ত মেরামতের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।

চিতলমারী থেকে গরীবপুর হয়ে বাওয়ালীপাড়া গ্রামীন সড়কটি সংষ্কারের অভাবে চলাচলে সম্পূর্ণ অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এ সড়ক ব্যবহারকারী গ্রামবাসীরা উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে হিমসিম খাচ্ছে। কোন প্রকারের যানবাহন এ রাস্তায় চলাচল করতে পারেনা।
ফরিদপুরের ভাংগা এলাকার ট্রাক ড্রাইভার মোঃ মাসুদ বেপারী বলেন, আমি ১৩ বছর ধরে গাড়ী চালাই। বহু খারাপ রাস্তা দেখছি। কিন্তু চিতলমারী খাসেরহাট আসলে বুকের ভিতর কাঁপে। সর্বক্ষণ আতংকে থাকি যে কখন যানি আমার গাড়ী ফেসে যায়। এই সমস্ত রাস্তা তাড়াতাড়ি সংস্কার হওয়া দরকার।

বোয়ালিয়া গ্রামের পুরাতন ভ্যান চালক শান্তি রঞ্জন মন্ডল, বাবুগঞ্জের আক্কাস আলী, খিলিগাতী গ্রামের মিঠুন বাওয়ালীসহ অনেকে জানায়, কয়েক দিন আগে এই রাস্তায় মেরামতের কাজ হয়েছে। অথচ ৬ মান যেতে না যেতেই তা নষ্ট হয়ে গেলো। এই রাস্তায় ভ্যান চালানো যে কত কষ্টের তা কাউরে বোঝানো যাবে না। সরকারের কাছে এই রাস্তা তাড়াতাড়ি মেরামতের দাবী জানাচ্ছি।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব নিজাম উদ্দীন শেখ জানান, আমার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার কথা আমি মাসিক আইন শৃংখলা মিটিংয়ে তুলি। কিন্তু আমার কথায় কেউ সাড়া দেয়নি।

চিতলমারী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাকারিয়া ইসলাম জানান, যে সকল রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার অধিকাংশ সড়কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় খাল পুনঃখনরের কাজে ব্যবহৃত দশ চাকার বড় গাড়ী চলাচলের কারনে হয়েছে। বাখরগঞ্জ থেকে গোদাড়া গেটের রাস্তাটি কয়েক স্থানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া মধুমতী ও চিত্রা নদীর পাড়ে চিতলমারী থেকে বাবুগঞ্জ এবং চিতলমারী থেকে বাখরগঞ্জ সড়কে ফাটল ধরেছে। অফিসিয়াল ভাবে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি। অপর দিকে জনদূর্ভোগ নিরসনের জন্য আমরা দ্রুত চেষ্টা করছি।