অবহেলা-বঞ্চনার অভিযোগ : ৯০’র পর খুলনার জাপা কিছুই পায়নি দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১ আতিয়ার রহমান ,খুলনা : প্রতিষ্ঠার ৩৬ বছর পার করলো জাতীয় পার্টি। এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষে মহানগর ও জেলা জাপা যৌথভাবে নানা কর্মসূচি পালন করেছে একাদিক বার। তবে দলটির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ৯০-এর পর থেকে খুলনা জাপা কিছুই পায়নি, পেয়েছে শুধু অবহেলা আর বঞ্চনা। এ জন্য খুলনায় জাপার অতীতের সমৃদ্ধ ইতিহাস ধরে রাখাই যেন কঠিন। জাপা কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু যায়যায়দিনকে বলেন, তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে জাপার রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। ওয়ার্ড কমিটি থেকে তিলে তিলে আজ তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। কিন্তু ৯০’র পর থেকে খুলনায় জাপা কিছুই পায়নি। পেয়েছে শুধু অবহেলা আর বঞ্চনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার লেভেলের সকল নেতারা আজ জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনও হতে পারেননি। এছাড়া জাপা মহাজোটের সাথে কাজ করলেও খুলনা বিভাগে তার তেমন কোন সুফল পায়নি নেতা-কর্মীরা। একটি আসনেও মহাজোটের একক প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থেকে জাপা বঞ্চিত হয়েছে। এতে করে এ বিভাগে জাপার সংসদীয় প্রতিনিধিত্ব হারিয়েছে। কমেছে আ’লীগের নিকট এ বিভাগের জাপার মূল্যায়ন । বেড়েছে অবহেলা আর অবজ্ঞা। একই কথা বললেন জাপার প্রবীন নেতা শাহ লায়েক উল্লাহ। তিনি বলেন, খুলনার শীর্ষ জাপার নেতা বলতে গফ্ফার বিশ্বাস, আবুল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম মধুকে বুঝায়। এদের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার সকল যোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু এ তিনজন নেতার সম পর্যায়ের নেতারা জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার সম্মান অর্জন করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে খুলনার জাপার শীর্ষ নেতারা প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যদিও প্রথম দু’জন এখন আর জাপার রাজনীতির সাথে নেই। কিন্তু মধু আছেন। এছাড়া আ’লীগের অবমূল্যায়ন খুলনার জাপা আজ জ্বলে পুড়ে মরছে। তিনি জাপার শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করলেও দীর্ঘ দিনেও মূল পদে তিনি যেতে পারেননি। এতে করে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দলে মূল্যায়ন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। জাপা নেতা অপূর্ব দত্ত নেকু সুর মিলিয়ে বলেন বলেন, ৯০’র পর থেকে খুলনার জাপা কিছুই পায়নি। শুধু হারিয়েছে। আজ দলীয় কার্যালয়টি জরাজীর্ণ। খুলনায় নেই কোন প্রেসিডিয়াম সদস্য, নেই সংসদ সদস্য, নেই উপজেলা ও পৌর সভার চেয়ারম্যান। মানুষ যদি কোন সুযোগ সুবিধা না পায় তাহলে দল করতে চায় না। এ জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। যাতে করে জাপা সমাজে মূল্যায়ীত হতে পারে। মহানগর জাপা নেতা ইসরাফিল মোল্লা বলেন, এখন সমাজের বড় একটি অংশ জাপার রাজনীতি করতে চায় না। তা ছাড়া যারা এরশাদ ভক্ত তারা জাপা করে। কিন্তু কোন সুবিধা না পাওয়ায় একদিন তারাও হারিয়ে যায়। এ হারিয়ে যাওয়া লোকগুলোকে ধরে রাখার উদ্যোগ সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। তবেই ৯০’র আগের মত খুলনায় জাপার রাজনীতি চাঙ্গা হবে। আড়ংঘাটা থানা জাপার সদস্য সচিব মোঃ রাসেল হোসেন বলেন, গ্রামের সিনিয়ররা এখনও এরশাদের সুশাসনের কথা আলোচনা করেন। তারা এরশাদভক্ত। কিন্তু সে রকম কোন প্লাটফরম না পাওয়ায় নিরবে নিবৃত্তে তারা জাপাকে ভাল ভেসে যায়। এ জন্য ঘরমুখো জাপা প্রেমিকদের দলীয় কার্যালয়মুখী করার উদ্যোগ সকলকে নিতে হবে। তবেই জাপায় ফিরে আসবে প্রাণ। একই কথা বললেন, জেলা জাপার প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, তিনি ১৯৯২ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে এ রাজনীতি করছেন। কিন্তু দল থেকে কিছুই পাননি। এরশাদকে ভাল লাগে তাই তিনি এ দল করেন। তবে জেলা জাপার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুর কারণে আজ খুলনা বিভাগে জাপার রাজনীতি টিকে রয়েছে। অনেকের মধুর মত দলে এতো ত্যাগ নেই। অথচ তারা প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। মধুকে প্রেসিডিয়াম সদস্য না করায় খুলনার জাপায় নেতা-কর্মীদের মাঝে কস্ট আর হতাশা বেড়েছে। অবিলম্বে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করে নতুন করে জেগে ওঠা জাপাকে ধরে রাখার দাবি এ নেতার। খুলনার অবহেলা আর বঞ্চনার ইতিহাস কমাতে হলে অবিলম্বে মধুকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন। একই মত পেশ করেন জেলা জাপার সদস্য আলহাজ্ব ইসমাইল খান টিপু। মহানগর জাপার সাবেক নেতা আঃ গফ্ফার মোড়ল বলেন বলেন, মহাজোট হলেও খুলনার জাপা আ’লীগের কাছ থেকে পায়নি কোন মূল্যায়ন। এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আ’লীগ তা দিতে চায় না। তারা আজ ক্ষমতায় জাপার কারণে। এটা তারা ভুলতে বসেছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে সাবেক সেনা প্রধান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে আতœপ্রকাশ পায় জাতীয় পার্টি। এরপর খুলনায় মন্ত্রী, হুইপ, পৌর সভার মেয়রসহ নানা সমৃদ্ধ পদে ছিল জাপা নেতারা। ছিলেন হুইপ মিয়া মুসা ও অগ্নিকণ্যা হাসিনা বাণু শিরিন, মন্ত্রী ছিলেন এইচএম কর্ণেল গফ্ফার ও এড. মোমিন উদ্দীন আহমেদ। ছিলেন এসএম এ রবের মত বর্ষিয়ান নেতা। এখন এসব নেতাদের কর্মকান্ড শুধুই ইতিহাস। মানুষ সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে এদের স্মরণ করেন। Share this:FacebookX Related posts: খুলনায় ঘর গোছাতে শুরু করেছে আওয়ামীলীগ খুলনা জেলা আ.লীগ কেউ কাউকে ছাড়তে নারাজ সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৪৯ টি ম্যান্ডাফ হাঁস উদ্ধার সাজা শেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশে গেল ভারতীয় ৬৩ জেলে ১৪ দিন শেষ হলেও খালেদা কোয়ারেনটাইনেই থাকবেন কিছু মানুষ নিয়ম না মানায় করোনা ছড়িয়ে পড়ছে বাগেরহাটে করোনা প্রতিরোধে অভিযান চলাচ্ছে সেনাবাহিনী মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মৎস্য আহরণ শরণখোলায় জাল ও মাছসহ ট্রলার আটক খুলনায় যত্রতত্র পার্কিংয়ে দুর্ভোগ : বেহাল কেডিএ’র সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল শার্শা উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ SHARES Matched Content খুলনা বিভাগ বিষয়: ৯০’র পরঅবহেলা-বঞ্চনার অভিযোগকিছুই পায়নিখুলনার জাপা