খুলনা জেলা আ.লীগ কেউ কাউকে ছাড়তে নারাজ

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০

খুলনা অফিস : পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে সমন্বয় করতে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারীকে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের আয়োজন করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক এই বৈঠকে সমন্বয় করছেন। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পাল্টাপাল্টি কমিটি নিয়ে ঢাকায় যান জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা। কিন্তু দুই নেতার মধ্যে সমন্বয় না থাকায় ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ম্যারাথন বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।

সূত্রটি জানায়, জেলা সভাপতির পক্ষ থেকে সদ্য দলে আসা এক জনপ্রতিনিধিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক আপত্তি না করলেও কেন্দ্রীয় নেতারা আপত্তি জানান। দীর্ঘ কয়েকযুগ ধরে দলের সঙ্গে থাকা সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন ব্যক্তিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করার বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ জানান তারা। তবে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক পদ নিয়ে কোনোভাবেই দুই নেতা একমতে পৌঁছাতে পারছেন না।

অভিযোগ উঠেছে, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে কাজ করা চিহ্নিত কয়েকজনকে জেলা কমিটিতে স্থান দেয়ার তৎপরতা চলছে। যা কোনভাবেই অপর পক্ষ মানতে নারাজ।

এক পক্ষের বক্তব্য, খুলনার ৯টি উপজেলার মধ্যে মাত্র দুটিতে নৌকার প্রার্থী জয় পেয়েছে। অপর দুটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন। তবে নির্বাচন হওয়া ৭টির মধ্যে ৫টিতেই হেরেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। ওই সময় পরাজিত প্রার্থীরা তাদের পরাজয়ের জন্য দলের একটি পক্ষকে দায়ী করেন। তারা বলেন, যারা নৌকার প্রার্থীদের প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেছে, তারা দলের কমিটিতে স্থান পেলে সাধারণ কর্মীদের দলের প্রতি আস্থা কমে যাবে। দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সূত্রটি জানায়, মঙ্গলবারের বৈঠক সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হওয়ায় বুধবার দ্বিতীয় দফা বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। এই বৈঠকে সমন্বয় করার কথা ছিলো দলের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৬ সেপ্টেম্বরের বৈঠক হয়নি। গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই বৈঠকেও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিষয়টি নিয়ে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী বলেন, আমি আমার অবস্থানে অনড় রয়েছি। বিগত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে যারা অবস্থান নিয়েছে, বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্য-এমন ব্যক্তিদের কমিটিতে রাখা যাবে না।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক যায়যায়দিনকে মোটে ফোনে বলেন, বড় দলে ছোট খাটো মতভেদ থাকে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা মিটে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক কিছু মিটে গেছে। দ্রুত অন্য সমস্যারও সমাধান হয়ে যা।###