খুলায় মাহেন্দ্রা-ইজিবাইক চালকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ নগরবাসী বাস সার্ভিস চায়

প্রকাশিত: ১১:১২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২১

আতিয়ার রহমান,খুলনা : খুলনা মহানগর ও ঝেরা উপজেলা গুলিতে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও সিএনজিতে যথেচ্ছা ভাড়া আদায়, দুর্ঘটনা, যানজট ও অসদ্বাচরণে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ক্ষুদ্র এসব পরিবহনে ব্যস্ত নাগরিক জীবনে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করলেও নানান ভোগান্তিতে জর্জরিত খুলনাবাসী।

বিভাগীয় শহর খুলনায় জনবসতি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গণপরিবহন সংকটও। শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের গণপরিবহন সংকট নিসরণে পুনরায় বিআরটিসির দ্বিতল বাস সার্ভিস চালুর দাবি নগরবাসীর।

সূত্রমতে, মহানগরীতে কেসিসির এক হাজার ২১৫টি সড়ক রয়েছে। যার মোট দৈর্ঘ্য ৬৪০ কিলোমিটার। একসময় মহানগরীতে লক্কড়-ঝক্কড় অবস্থার ৪০টি বাস চলাচল করতো। এসব নগর পরিবহন যাতায়াত করতো নগরীর রূপসা ঘাট থেকে ফুলতলা পর্যন্ত। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস বিএল কলেজের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ শহরের বেশিরভাগ মানুষ নগর পরিবহনেই যাতয়াত করতেন। তবে দীর্ঘদিন সে সব পরিবহনগুলো মেরামত না করায় ক্রমশই সেবার মান নিম্নমুখী হওয়া হয়ে যায়।

রাস্তয় চলাচলের ফিটনেস হারিয়ে নগরী থেকে হারিয়েই গেল রূপসা-ফুলতলা রুটের ঐতিহ্যের নগর পরিবহন। এরমধ্যে গণপরিবহন সংকট নিরসনে ২০১৬ সালের ১০ জুন পাঁচটি দোতলা বাস (ডাবল ডেকার) সার্ভিসের উদ্বোধন করেন খুলনা-২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ, জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুল আহসান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক (চেয়ারম্যান) শেখ হারুনুর রশীদ। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্তেও অল্পদিনে বন্ধ হয়ে যায় রাষ্ট্রীয় পরিবহন ‘বিআরটিসি’র এ সার্ভিসটি।

অথচ, দ্বিতল বাস সার্ভিস উদ্বোধনকালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুল আহসান বলেছিলেন, বাসগুলো রূপসা-ফুলতলা জনপ্রতি মাত্র ত্রিশ টাকায় চলাচল করবে। এছাড়া এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া ৫ টাকা। বাসগুলো ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরপর নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক এ পাঁচটি বাস চলবে। যাত্রীসংখ্যা সন্তোষজনক হলে পরবর্তীতে আরও পাঁচটি বাস নামানো হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

একাধিক সূত্র জানান, নগর পরিবহন মালিকদের বিরোধীতার কারণে টিকে থাকতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত এ পরিবহন। এরপর আর নগর পরিবহন নিয়মিত চলাচল না করায় বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা। অথচ বিভাগীয় শহর খুলনার কয়েকটি পয়েন্টে নির্দিষ্ট সময়ে যানজট নিত্যদিনের দুর্ভোগ। অগণিত ইজিবাইক, অতুল-মাহেন্দ্রা, সিএনজি ও অটোরিকশার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পায়ে চালিত রিকশাও। ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত নগর পরিবহন ছিল খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণাধীন। তবে তারা দায় নিতে নারাজ।

এ নিয়ে সমিতির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, নগর পরিবহনগুলোতে দিন দিন যাত্রী কমতে থাকার কারণে অনেকে মালিকই তাদের গাড়ী উঠিয়ে নিয়েছে। এছাড়া জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও অনুসাঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন গুটিয়ে নিতে একধরনের বাধ্য হয়েছেন মালিকরা।সম্প্রতি ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও সিএনজি চালক কর্তৃক যথেচ্ছা ভাড়া আদায়, দুর্ঘটনা, যানজট ও অসদ্বাচরণে অতিষ্ঠ নগরবাসী। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বেচ্চাসেবী সংগঠন খুলনা ফুড ব্যাংক/ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ সালেহ উদ্দিন ‘খুলনাতে নগর পরিবহন আন্দোলনে যোগ দিন’ নামের ভার্সুয়াল গ্রপে সমর্থন প্রত্যাশা করছে। অবিলম্বে বিভাগীয় শহর খুলনায় নগর পরিবহন হিসেবে বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালুর দাবিতে নগরবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

তুহিন হোসেন এখানে লিখেছেন, আমি স্টুডেন্ট। আমি বেকার। আমার বাবা একজন দিনমজুর। আমাদের কারও পক্ষেই প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত ভাড়া দেয়া সম্ভব না। আমার দাবি পাবলিক সার্ভিস, আপনারএ।