মাঠে ধান পাঁকলেও মিলছেনা শ্রমিক; রয়েছে কাল বৈশাখীর ভয়

প্রকাশিত: ৬:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : কৃষিনির্ভর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমের ধান পাকতে শুরু করেছে। সবুজ সোনালী রঙে ভরে উঠেছে মাঠের পরে মাঠ।

কোন ঝড়বৃষ্টি না হওয়া বিগত বছরের তুলনায় এবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও হাসি নেই এখানকার কৃষকের মুখে। কিভাবে মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মিলছেনা ধান কাটার শ্রমিক, অপরদিকে রয়েছে কালবৈশাখীর ভয়। সবকিছু মিলে যেন দিশেহারা এ অঞ্চলের ধান চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার বলছেন, এ উপজেলায় ১৮ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। যার অধিকাংশ চাষি দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। এবছর মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। অনান্য বছর থেকে এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা আশা করছি এ মৌশুমে ৭৭ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিকটন ধান কৃষকের ঘরে উঠবে। ধান কাটার শ্রমিক সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে মিটিং করেছি। বাগেরহাট ও খুলনার শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের আনার চেষ্টা করছি। এছাড়াও কৃষি অফিস থেকে ৩০টি ধান কাটার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রতি মন ধানের দাম ৯’শ টাকা পেলে কৃষক লাভবান হবে।

এ উপজেলার খড়মখালী গ্রামের কংকন মজুমদার, মনিমহোন হীরা, অসীম বিশ্বাস, কৃষ্ণ রানা, বড়বাড়ীয়া গ্রামের মিল্টন শেখ, ডুমুরিয়ার হরেন্দ্রনাথ মন্ডলসহ কয়েকজন চাষি জানান, লকডাউনের যে খবর শুনছি তাতে মনে হয় এবছর মাঠের পাঁকা ধান ঘরে আসবেনা। প্রতিবছর খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে ধান কাটার শ্রমিকরা আসতো। করোনা ভাইরাসের ভয়ে তারা আসতে পারছেনা। এখন কি দিয়ে কি করবো মাথায় আসছেনা। স্থানীয় যে শ্রমিক আছে তাতে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।

যদি এর মধ্যে যদি শীলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখীঝড় হয় তাহলে বাঁচার উপায় থাকবেনা। আবার শুনছি নতুন ধানের বাজার ভালোনা। ধান চাষ করতে আমাদের একর প্রতি খরচ আছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। খুব ভালো ফলন হলে প্রতি একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মন ধান উৎপাদন হয়। হাজার টাকার কমে ধানের মন বিক্রি করলে চালান বাঁচবেনা।

বাগেরহাট জেলা কৃষক সমিতির নেতা কমরেড পংকজ রায় বলেন, এই মূহুর্তে আমরা কঠিন সময় পার করছি। নোবেল করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর থাবায় আমরা ক্লান্ত। আমাদের এখনই উচিৎ দলমত নির্বিশেষে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কৃষকের পাশে দাড়ানো। তাদের ঘাম ঝরানো সোনার ফসল ঘরে তুলে দেওয়া। পাশাপাশি সরকারিভাবে ধানের দাম ১১ থেকে ১২ শ টাকা হওয়া দরকার এবং কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা প্রয়োজন।