ব্রীজ না থাকায় দু’পারের অর্ধশত গ্রামের মানুষের বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ১:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২০ নিজস্ব প্রতিবেদক : মেহেরপুরের গাংনীর গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ভৈরব নদীতে ব্রীজ নির্মানের দাবী দির্ঘদিনের। নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় বিভক্তি করে রেখেছে গাংনী পুর্বাঞ্চল ও গাড়াবাড়িয়ার হিতিমপাড়ার পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত বিশ গ্রামের মানুষকে। এতে স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত করতে যেমন সমস্য তেমনি সমস্যা ওপারের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পন্য শহরে আনতে। ভৈরব নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মানের আশায় বুক বেঁধে আছেন দ’ুপারের ভুক্তভোগী হাজারো মানুষ। মেহেরপুর জেলার সর্বাপেক্ষা প্রাচীন এবং প্রধান নদী ভৈরব। ফানডেন ব্রো ১৬৬০ সালের দিকে তাঁর নকশায় দেখিয়েছেন-জলাঙ্গী ও চন্দরা নামে যে দুই সহোদরা প্রমত্তা পদ্মা থেকে বেরিয়ে ভাগীরথীতে মিশেছে, তারই একটি শাখা নদী জলাঙ্গী (পশ্চিমবঙ্গে প্রবাহিত) একদা ভৈরব নামে চুয়াডাঙ্গার নিচ দিয়ে প্রবেশ করে যশোর খুলনার ভেতর দিয়ে গড়াই প্রবাহের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে ভৈরব। তেমনি ভাবে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল সহ গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়ার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদী। বিভিন্ন সরকারের আমলে বিবিন্ন সময় জনদুর্ভোগ লাঘবে ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও প্রাচীন কাল থেকেই সমস্যা জর্জরিত গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। চৈত্র-বৈশাখের দিকে পানি কমে গেলেও আষাড়ের শুুরুতেই পানিতে টৈই-টুম্বুর হয়ে ওঠে ভৈরব নদী। এ ভৈরব নদী তার নিজস্ব গতিতেই বহমান। কিন্তু মেহেপুর জেলার গাংনী উপজেলার পুর্বে এবং পশ্চিমের অর্ধশত গ্রামকে বিভিক্তি করে রেখেছে। এলাকাবাসী জানায়, গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ভৈরব নদীর ওপর দিয়ে নৌকা ও বাঁশের সাঁকোই পারাপার হতে হয় অন্তত বিশ গ্রামের মানুষকে। হিতিমপাড়া,ষোলমারি,শুভরাজপুর,কুতুবপুর, রামদাসপুরসহ অন্তত দশ গ্রামের মানুষকে প্রতিনিয়িত মেহেরপুর জেলা শহর ও গাংনী উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়াও ওপারের গাড়াবাড়িয়া,কালিগাংনী,ধলা,নওপাড়া,ভিটাড়াপাড়া,কুরবাড়িয়া এলাকার মানুষের নদী ওপারে কৃষি জমি থাকায় আবাদ করতে যেতে হয় তাদের। কৃষি জমির উৎপাদিত ফসল ঘরে আনতে পড়তে হয় নানা বিপাকে। বাঁশের তৈরী সাঁকো কিংবা নৌকাতে বহনকৃত কুষিপন্যে খরচ হয় দ্বি-গুন। অনেক কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বহন করে শহরে নিয়ে আসতে বাড়তি খরচ ও বাড়তি ঝামেলা ভেবে কম মুল্যে স্থানীয় বা বহিরা গত ফড়িয়াদের মাধ্যমে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক জমির মালিক আবাদ করতে না পেরে কম মুল্যে জমি ইজারা দিয়ে দেন অথবা আবাদ না করেই ফেলে রাখেন। রামদাসপুর গ্রামের ইউসুব আলী জানান,নদী ওপারের জমি সবজি আবাদের জন্য খুবই উপযোগী। অনেক দামী সবজি ফসর উৎপাদন হয় কিন্ত পরিবন ব্যবস্থা না থাকায় ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। আর এক কৃষক গোলাম হোসেন জানান, গাড়াবাড়িয়া ঘাঁট দিয়ে বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকা যোগে কৃষিপন্য বহন করা খবই কস্টসাধ্য ব্যাপার তাই আবাদ করে কমমুল্যে বিক্রি করে দিতে হয় আমাদের কষ্টেঅর্জিত ফসল। স্থানীয় গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা হিজরুল ইসলাম জানান, নদীর ওইপারে রামদাসপুর গ্রামে আমার জমি আছে,কৃষিপন্য পরিবহনে অনেক ঝামেলা তাই সে জমি মাত্র কয়েক হাজার টাকা নিয়ে ওপারের মানুষকে ইজারা দিয়ে এসেছি। গাড়াবাড়িয়া খেয়া ঘাঁট দিয়ে একটি ব্রিজ নির্মানের দাবী তাদের দির্ঘদিনের। এ গ্রামের কৃষক হারুন আলী জানান, আমার জমিতে বর্ষা মৌসুমে উঠতি ফসলের আবাদ ছেড়ে দিয়েছি। শুধু মাত্র চৈত্রের আবাদ করি। গাড়াবাড়িয়ার প্রবীণ শিক্ষক জোয়াদ আলী জানান, শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো –আর বর্ষাকালে নৌকা হচ্ছে দুপারের মানুষের ভরসা। ছাত্র-ছাত্রীরা বর্ষায় স্কুলে আসতে ভয় পাই। সরকার ও স্থানীয় জন-প্রতনিধিদের কাছে শতশতবার আবেদন করেও দু’পারের মানুষের ভাগ্য বদলাইনি। নদীপারে দাঁড়ালে মনে হয় একটি ব্রীজ দু’পারের মানুষকে বিভক্তি করে রেখেছে। নৌকার মাঝ বা সাঁকো নির্মানকারিকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। কাথুলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলজার হোসেন জানান,গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ঘাঁটে একটি ব্রিজ নির্মানের দাবী দির্ঘদিনের। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সরকারের কাছে সংসদ সদস্যর মাধ্যমে দাবী করেছি ব্রিজ নির্মাণের জন্য। তিনি আরো বলেন,ওপারে আমারও জমিজমা আছে সেখানে আবাদ করতে যেমন কস্ট হয় তেমনী পরিবহন খরচ পড়ে দ্বিগুন। কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা বলেন, আমার ইউনিয়ন হিসাবে ব্রিজ নির্মাণের জন্য তদবীর চালিয়ে যাচ্ছি। মেহেরপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এ বিষয়নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়েছেন। এবং বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছেন জনগনের দাবী মেটানোর জন্য। মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন,আমার নির্বাচনী এলকা গাড়াবাড়িয়া-ভৈরব নদীর ওপর একটি ব্রজি নির্মাণ অতিবজরুরী। আমি উক্ত স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবী জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দাবী উত্থাপনসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। তবে ব্রিজ নির্মাণ হবে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। এতে যা করার এবং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রিজ নির্মাণ সম্ভব সে প্রক্রিয়াতেই গাড়াবাড়িয়া ও হিতিমপাড়া অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পুুরুন হবে। Share this:FacebookX Related posts: যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকই একমাত্র ভরসা! খুলনায় মানুষের মনিকোঠায় দীপ্তিময় আলো ছড়াচ্ছে পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৪৯ টি ম্যান্ডাফ হাঁস উদ্ধার খুলনায় জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালিত কর্তৃপক্ষের গাফেলতিতে পরীক্ষা দিতে পারলেন না ৫ শিক্ষার্থী যশোরের বেনাপোলে ১০টি স্বর্ণের বারসহ আটক-১ বাগেরহাটে করোনা প্রতিরোধে অভিযান চলাচ্ছে সেনাবাহিনী মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মৎস্য আহরণ শরণখোলায় জাল ও মাছসহ ট্রলার আটক শার্শার বাগআঁচড়া পরিষদে বাজার কমিটি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহে চোরাই মোটরসাইকেলসহ ভুয়া পুলিশ সদস্য আটক দুই কচ্ছপ বিক্রেতাকে জরিমানা SHARES Matched Content খুলনা বিভাগ বিষয়: একমাত্র ভরসাদু’পারের অর্ধশত গ্রামেরবাঁশের সাঁকোইব্রীজ না থাকায়মানুষের