চিতলমারীতে ধানের বাম্পার ফলন হাসি নেই কৃষকের মুখে

প্রকাশিত: ৭:৩০ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ; কৃষিনির্ভর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমের ধান পাঁকতে শুরু করেছে। সবুজ সোনালী রঙে ভরে উঠেছে মাঠের পরে মাঠ। কোন ঝড়বৃষ্টি না হওয়া বিগত বছরের তুলনায় এবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও হাসি নেই এখানকার কৃষকের মুখে। কিভাবে মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলবে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সংশয়।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মিলছেনা ধান কাটার পর্যাপ্ত শ্রমিক। যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের চাহিদা অনেক। ৮ থেকে ৯শ টাকায় কাজে লাগাতে হচ্ছে প্রতিটি শ্রমিককে। অপরদিকে ধানের দাম রয়েছে ৬২০ টাকা মন। পাশাপাশি শুরু হয়েছে কাল বৈশাখীর ভয়ংকর তান্ডব। গত মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে এ উপজেলায় হঠাৎ করে কালবৈশাখীর ডান্ডব শুরু হয়। গাছের ডাল ভেঙে হিজলা গ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সবকিছু মিলে দিশেহারা হয়ে পরেছে এ অঞ্চলের ধান চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার বলছেন, এ উপজেলায় ১৮ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। যার অধিকাংশ চাষি দারীদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। এবছর মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতেবোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি এখন ৭৭ থেকে ৮০ হাজার টন ধান কৃষকের ঘরে উঠবে। ধান কাটার শ্রমিক সংকটের বিষয় আমরা ইতিমধ্যে সমাধান করেছি। সবাই একসাথে ধান কাটতেব শুরু করেছে। যার কারণে শ্রমিকের দাম একটু বাড়তে পারে। তবে প্রতি মন ধানের দাম কমপক্ষে ৯শ টাকা পেলে কৃষক লাভবান হবে।

এ উপজেলার খড়মখালী গ্রামের কংকন মজুমদার, মনিমহোন হীরা, অসীম বিশ্বাস, কৃষ্ণ রাণাসহ কয়েকজন চাষি জানান, ধানের দাম আছে ৬শ টাকা মন আর কিষাণ আনতে গেলে ৮/৯শ টাকার কমে কেউ আসতে চায় না। ধান চাষ করতে আমাদের একর প্রতি খরচ আছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। খুব ভালো ফলন হলে প্রতি একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মন ধান উৎপাদন হয়। হাজার টাকার কমে ধরনের মন বিক্রি করলে চালান উঠবেনা।

বাগেরহাট জেলা কৃষক সমিতির নেতা কমরেড পংকজ রায় বলেন, এই মূহুর্তে আমরা কঠিন সময় পার করছি। নোভেল করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর থাবায় আমরা ক্লান্ত। আমাদের এখনই উচিৎ দলমত নির্বিশেষে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কৃষকের পাশে দাড়ানো। তাদের ঘাম ঝরানো সোনার ফসল ঘরে তুলে দেওয়া। পাশাপাশি সরকারি ভাবে ১১ থেকে ১২ শ টাকা দরে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা দরকার।

এ উপজেলার ধান ব্যবসায়ী শিবলী, লিপন ও উত্তম বাড়ৈ জানান, আমাদের যেমন অর্ডার আসে তার বাইরে ধান কেনার উপায় নাই। সামনে হয়তো ধানের দাম ৭/৮ টাকা হতে পারে।