চিতলমারীতে সবজি চাষ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় কৃষক; চাষ হচ্ছে না অধিকাংশ ফসলি জমি

প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধ ; বাগেরহাটের চিতলমারীতে সবজি চাষে অনিহা প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষীরা। দফায় দফায় ঝড়-বৃষ্টি আর বন্যার কারনে বিগত কয়েক বছর চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এখন বিশ্ব মহামারী নোবেল করোনা ভাইরাসের কারণে জনজীবন থমকে গেছে। চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন।
এরমধ্যে চাষ করলে উৎপাদিত ফসল বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। ব্যাপ হারে চাষাবাদ করতে ভীত কৃষকরা ভবিষ্যতের চিন্তায় নিমগ্ন। হাতে নগদ টাকা না থাকায় শুধু নিজেদের খাবার জন্য অল্প স্বল্প কিছু জমিতে চাষ করছে তারা। ফলে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে না এখানকার অধিকাংশ ফসলি জমি। মাঠের অধিকাংশ জমি বিনা চাষে পড়ে রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১৫ হাজার কৃষি পরিবার আছে। এবছর প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে শশা, করোলা, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি চাষ হচ্ছে। শশা করোলায় বিখ্যাত এ উপজেলায় খাসেরহাট, কালীগঞ্জ, নালুয়া এবং সদর বাজারসহ ৬টি কাচামালের বাজার রয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এসব বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক শশা, করোলা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, বরবটি, চিচিঙ্গা ইত্যাদি শাকসবজি রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়।

এছাড়া নৌ-পথে বরিশালের বিভিন্ন জেলায় এখানকার উৎপাদিত সবজি বিক্রি হয়। হাটে বড় পাইকারী ব্যবসায়ী আসে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে। উপজেলার বাওয়ালী পাড়ার সবজি চাষী অসীম বাড়ৈ জানায়, “গতবছর আমি ৪ হাজার শশা, ৩ হাজার করোলা এবং ২শ লাউ গাছ লাগিয়েছিলাম।

এবছর করোনা ভাইরাসের যে খবর শুনতেছি তাতে চাষ করবার হাউস (ইচ্ছা) নাই। ভাবছি কোনমতে অল্পকিছু গাছ লাগাবো। নিজেদের খাবার কয়ডা হলেই হবে।” শান্তিখালি গ্রামের সবজি চাষী হীরা জানায়, গতবছর ৩৫শ শশা গাছ লাগিয়েছিলাম এবছর মাত্র ৪/৫শ গাছ লাগাবো। দেশের অবস্থা এরকম থাকলে ব্যাপারি আসবে কি না-আসবে তার শিওর কি? যদি না আসে তাহলে উৎপাদিত ফসল কোথায় বিক্রি করবো। এজন্য কমকম চাষ করছি।” চিতলমারী সদর বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী সেলিম সুলতান সাগর বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে পরিমান বীজ সার এবং কীটনাশক বিক্রি হতো এবছর তার অনেক কম বিক্রি হচ্ছে। মনে হয় এবছর চাষাবাদ অনেক কম হচ্ছে।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, ফসল বিক্রি নিয়ে আমরা চিন্তিত। যদি ঢাকা-চিটাগাং থেকে কোন ব্যাপারি আসে তারা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কিনা এটা নিয়ে চাষীরা আতংকিত হতে পারেন। তাই বিকল্প কিছু করার জন্য স্যারদের জানিয়েছি। এছাড়া ফসলি জমি চাষের জন্যে উপসহকারীদের নিয়ে আমি নিজেও নিয়মিত ফিল্ডে কাজ করে যাচ্ছি।