পঞ্চগড়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে ডিসির উপহার

প্রকাশিত: ৭:২৩ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধনদেব পাড়া গ্রামের করোনা আক্রান্ত আইসোলেশনে থাকার রোগীর (৩৮) বাড়িতে পৌঁছে গেল জেলা প্রশাসকের উপহার সামগ্রী। উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, লবণ, চিনি, চিনি, তেল, চিড়া, নুডুলস ও ফলমূল। এ সময় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ব্যাপারে লোকজনের নেতিবাচক আচরণ পরিবর্তনের বার্তা প্রচার পৌঁছানো হয়। ওই বার্তায় ছিল ‘ভয় নেই, জেলা প্রশাসন আপনার পাশে আছে। সাহস ও মনোবল হারাবেন না, করোনা হারবেই, আপনিই জিতবেন।’

শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসকের পক্ষে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. গোলাম রব্বানী এসব উপহার ও বার্তা পৌঁছে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তিনি তাকে সাহস ও ধৈর্য্যে ধারণ করতে বলেন।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ আপনার সাথেই আছেন। কাজেই মনোবল হারাবেন না। এ সময় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আফরোজা বেগম রীনা তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ব্যবস্থাপত্র দেন।

ওই ব্যক্তি কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা পরীক্ষাগারে ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ে। শরীরে কোন উপসর্গ না থাকলেও বুধবার তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান। নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে ফেরার খবর পেয়ে এর আগেই তার বাড়িটি লকডাউন করে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম রব্বানী। তাকে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।

করোনা আক্রান্ত ওই রোগী মুঠোফোনে জানান, জেলা প্রশাসকের ফোন ও উপহার সামগ্রী এবং বার্তা পেয়ে তিনি জেলা জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান।

সিভিল সার্জন জানান, এ নিয়ে জেলায় ১১ জনের করোনা শনাক্ত হলো। এর আগে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় চার জন, বোদা উপজেলায় দুই জন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় তিন জন ও পঞ্চগড় সদর উপজেলায় এক জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদের বেশিরভাগই ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জসহ করোনা সংক্রমিত হটস্পট থেকে পঞ্চগড়ে ফিরেন। একজন ভারত ভেরত। তবে আক্রান্তদের প্রায় সবার শরীরে করোনার তেমন কোন উপসর্গ ছিল না। তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন। জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৭৫ জনের মধ্যে ৫২৫ জনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে ১১ জনের শরীরে।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গত ১৭ এপ্রিল ঢাকা ফেরত এক নারীর প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। তার পরদিন থেকেই পুরো জেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। তবে ওই নারীর দ্বিতীয়বার নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে। সিভিল সার্জন তাঁকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করেন।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,‘ করোনায় আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারের প্রতি অনেকেই অমানবিক আচরণ করছেন। এতে অনেক রোগী সাহস ও মনোবল হারিয়ে ফেলছেন। সবার সাথে মোবাইলে কথা বলেছি। নিয়মিতভাবে চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছি।’