হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে বরেন্দ্র অঞ্চলে চলছে বোরো রোপণ

প্রকাশিত: ১১:২২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : হাড়কাঁপানো কঁনকঁনে শীতের ভিতর বোরো চাষের জন্যে ঝুঁকে পড়তে শুরু করেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত কনকনে শীতল ঠান্ডা পানিতে নেমে বোরো ধানের বীজ (চারা) তুলে জমিতে রোপণ করছেন শ্রমিকরা।

পাশাপাশি বোরো চাষের জন্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে ধানের জমি। ভোর রাত থেকে শুরু করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত গরুর লাঙ্গল ও ট্রাক্টর দিয়ে বোরো জমি চাষের জন্য হাল চাষ করে প্রস্তুত করছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, তানোরে আমন ধান কাটার পরপরই আলু রোপণের জন্য হিড়িক পড়ে। এবার অন্য বছরের তুলনায় রাজশাহীর তানোর উপজেলাজুড়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উত্তোলনের পরে সেইসব জমিতেও চাষ করা হবে বোরো ধান। তবে যারা আলু চাষ করেননি তাঁরা জমিতে আগাম বোরো চাষের জন্য এখন থেকে নেমে পড়েছেন। ভোর থেকে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শ্রমিকরা চারা রোপণ করছেন বোরো জমিতে।উপজেলার বিভিন্ন বোরো জমির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বোরো চাষের জন্য এখন থেকেই আগাম বোরো চাষের জন্য জমি হালচাষ করছেন। পরে বোরো ধানের চারা সংগ্রহ করে চাষকৃত জমিতে রোপণ করছেন কৃষকেরা।

তানোর পৌর এলাকার গুবির পাড়া গ্রামের কৃষক আবু রহমান জানান, তিনি এবার ২৫বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। ইতোমধ্যে সবার আগে বিলকুমারী বিলে পানি নিষ্কাসনের সাথে সাথে তিনি ৯ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করতে শুরু করেছেন। আমন ধানের ফলন ভালো পওয়ায় এবার বোরো চাষের জন্যে একটু আগেই জমি চাষের জন্যে প্রস্তুত করাসহ বোরো রোপণ শুরু করছেন।

তিনি আরও বলেন, এবার প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে কৃষি শ্রমিক তেমন পওয়া যাচ্ছে না। যারা করছেন তারাও মজুরি গতবারের থেকে এবার বেশি নিচ্ছেন। তবুও কৃষক কিছুই মনে করছেন না। কারণ, যে পরিমাণ ঠান্ডা তাতে করে বোরো চাষের জন্য বর্তমানে শ্রমিক পাওয়ায় কষ্টকর বলে জানান।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গেল মৌসুমে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ধানের দামও ভালো পেয়েছেন কৃষকরা। হেক্টর প্রতি ৭ মেট্রিক টন করে ফলন হয়েছে। সব হিসেব করে ২৫ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে এবার বোরো ধানের ফলন হবে ১ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ মেট্রেক টন। যা উপজেলার জনসাধারণের চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তবে গতবারের চেয়ে এবার বোরো আবাদও হবে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কি পরিমাণে বোরো চাষ হবে তা এখনই জানাতে পারেনি কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, গেল মৌসুমে আমনের ফলন ও দাম ভালো পেয়েছে কৃষকরা। সেই জন্য এবার বোরো চাষের জন্য বেশি ঝুঁকছে। আশা করছি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরও কৃষরা বোরো ধানের ফলন ভালো পাবেন।