ফেসবুকে প্রতারণা, প্রেমিকাসহ গ্রেফতার ৩ জন রিমান্ডে

প্রকাশিত: ১০:১৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ; বগুড়ার নন্দীগ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতারণার মূলহোতা রিনা ও তার সহযোগীদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই তিন আসামিকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ড চাইলে বিচারক তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানান।

আসামিরা হলেন- উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ভদ্রদীঘি গ্রামের প্রবাসী সুজন প্রামাণিকের স্ত্রী রিনা বেগম (৩৭), তার সহযোগী কহুলী গ্রামের মিলন হোসেনের ছেলে লিটন হোসেন (২২) ও কহুলী গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে গোলাম রাব্বি (২০)।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম থানায় আব্দুল মোত্তালেবের দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নাটোরের গুরুদাসপুর থানার কালাকান্দর গ্রামের আব্দুল মোত্তালেব একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকুরি করেন সিলেটে। গত দেড় মাস আগে আব্দুল মোত্তালেবের সঙ্গে শিপলু সাথী নামের একটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে রিনা বেগমের পরিচয় হয়। কথোপকথনের একপর্যায়ে তাদের বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

গত সোমবার (১৬ জুন) সকালে সিলেট থেকে আব্দুল মোত্তালেব নন্দীগ্রাম ভদ্রদীঘি গ্রামে প্রেমিকার রিনা বেগমের বাড়িতে দেখা করতে যান। প্রেমিকা রিনার বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন তার স্বামী সৌদি আরবে থাকেন। তখন বাড়ির ভেতরে যেতে চায় না আব্দুল মোত্তালেব। এরপর স্থানীয় দুই যুবক তার হাত ধরে আপ্যায়নের কথা বলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।

এ সময় তার কাছে থেকে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর ওই বাড়িতে আরও ৪ যুবক আসে। ওই টাকা দিতে রাজি না হলে তাকে চড়-থাপ্পরসহ হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। একপর্যায়ে আব্দুল মোত্তালেবের কাপড় খুলে মোবাইল ফোনে উলঙ্গ ছবি ধারণ করে। সেই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়া দেয়ার হুমকি দেয় তারা।

এ সময় মোত্তালেব বন্ধুদের ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। বাকি ৮৫ হাজার টাকা দিতে না পারায় ওই দিন সন্ধ্যায় দুটি ফাঁকা নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তারা। এছাড়া মোবাইলে থাকা একটি মেমরী কার্ড, মানি ব্যাগে থাকা একটি সাউথ-ইষ্ট ব্যাংক ও একটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আব্দুল মোত্তালেব বাদি হয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বুলু মিয়াসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, গ্রেফতারকৃত রিনা বেগম ও তার সহযোগীরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। ওই চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।