ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম

প্রকাশিত: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে নওগাঁর রাণীনগর পোস্ট অফিসের কার্যক্রম। ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে কখনো মাথার ওপর কখনো যন্ত্রপাতির ওপর খুলে পড়ছে পলেস্তারা।

দীর্ঘদিন ধরে কোন সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় বর্তমানে পোস্ট অফিসের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা যায়, মানুষের কাছে বর্তমান সময়ে পোস্ট অফিসের গুরুত্ব কমে গেলেও এখনো সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের চিঠিপত্র আদান-প্রদান, চাকরির আবেদন, সঞ্চয়পত্র লেনদেনসহ বিভিন্ন কাজের জন্য এখনও পোস্ট অফিসে আসতে হয়। রাণীনগর উপজেলা পোস্ট অফিস এখনও জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু পোস্ট অফিসের ভবনের অবস্থা এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

এছাড়াও, পোস্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের সব সময় ছাদের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। কারণ কখন যে কার মাথার ওপর ছাদের নিচের পলেস্তারা খুলে পড়বে তা বলা মুশকিল। শুধুমাত্র ভবনের ভেতরের অংশই নয় পুরো পোস্ট অফিস চত্বরের প্রতিটি জিনিসের অবস্থা খুবই নাজুক। নিরাপত্তা প্রাচীরও কোথাও কোথাও ভেঙ্গে গেছে। আবাসিক ভবনের ভেতর দিন-রাত বিভিন্ন জীবজন্তু খেলা করে। যে কারণে সন্ধ্যার পর এক ভুতরে পরিবেশের সৃষ্টি হয় পোস্ট অফিস প্রাঙ্গণে।

সরকারি এমন জনগুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রতি নতুন করে মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করতে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন ভেঙ্গে আধুনিকমানের একটি নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবি সেবাগ্রহীতাদের।

পোস্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, মোসলেমা খাতুনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোর খারাপ অবস্থা তা জানতাম, কিন্তু এতো পরিমাণ খারাপ তা আমাদের জানা ছিলো। সরকারি দপ্তরগুলো যে খুবই অবহেলিত তা এই পোস্ট অফিস ভবনে এলে স্পষ্ট বোঝা যায়। আমরা পোস্ট এলে সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি যে কখন বুঝি ভবনের ছাদ ভেঙ্গে আমাদের ওপর পড়ে। যেদিন ভবন ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে সেদিন সরকারের টনক নড়বে। অতি দ্রুত পোস্ট অফিসের এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙ্গে আধুনিকমানের একটি ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ পোস্ট অফিসে কোন সেবা নিতে আসবে না।

পোস্ট মাষ্টার জালার উদ্দিন বলেন, আমরা পোস্ট অফিসে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে অফিসের অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গরমের সময় আমরা ভয়ে ফ্যান চালু করি না। কারণ ফ্যান কখন যে আমাদের কিংবা সেবাগ্রহীতাদের মাথার ওপর খুলে পড়ে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এমতাবস্থায় আমরা সেবার মানও বাড়াতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, যে কার্যক্রমগুলো না করলেই নয় সেগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। পোস্ট অফিসের প্রতি সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করতে চাইলে দ্রুত এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে একটি আধুনিকমানের নিরাপদ পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ করা জরুরী। তা না হলে এক সময় সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে সাধারণ মানুষ পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নেবে। কতবার যে ভবনের এমন অবস্থার কথা কাগজে-কলমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি তার কোন ইয়ত্তা নেই। কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র আশ্বাসই এখন আমাদের প্রধান ভরসা।