খুলনায় নেই গাড়ির স্থায়ী ডাম্পিং ষ্টেশন

প্রকাশিত: ৫:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেএমপি) এলাকায় প্রতিনিয়ত ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে আটক হচ্ছে একাধিক যানবাহন। অনেক গাড়ির মালিক আইন লঙ্ঘনের জরিমানা দিয়ে পরিবহণ ছাড়িয়ে নেয়। তবে যানবাহনের কাগজপত্রের ক্রটি এবং কেএমপিতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞ আছে এমন গাড়িগুলো আটক করে ডাম্পিং করা হয়।

কেএমপিতে গাড়ির স্থায়ী কোন ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় নগরীর জোড়াগেটে প্রায় তিন বছর ধরে আটককৃত গাড়ি অস্থায়ীভাবে ডাম্পিং করা হচ্ছে । এতে নিরাপত্তাসহ রয়েছে নানান ঝুঁকি। তবে সম্প্রতি কেএমপি কমিশনার সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিসহ গাড়ির জন্য স্থায়ী ডাম্পিং ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছেন ইতি মধ্যে।

জানা যায়, কেএমপির ট্রাফিক পুলিশ যে সকল গাড়ি আটক করে সেগুলো নগরীর জোড়াগেটে ডাম্পিং করা হলেও বিভিন্ন থানায় আটক করা গাড়িগুলো থানাতেই ডাম্পিং করা হয়। এছাড়া মামলার কার্যক্রম চলমান থাকায় অনেক গাড়ি ডাম্পিং করা হয় খুলনা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট চত্ত্বরে। এদিকে বছরের পর বছর খোলা জায়গায় গাড়ি ডাম্পিং থাকায় বেশিরভাগ যন্ত্রাংশই হয়ে পড়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে বলে একাদিক অভিযোগ আছে। এছাড়া গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ তো আছেই রাতারাতি গাড়ির মালামল চুরি করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গাড়ি ডাম্পিং করার পর পরিবহন ইউনিয়নের নেতা, ক্ষমতাসীন দলের নেতাসহ বিভিন্ন মহলের সুপারিশ ও হুমকি আসে আটককৃত গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আদায় না করেই অবৈধ গাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয় প্রশাসন। যার ফলে অবৈধ গাড়ি আটকের পর সেটা ছেড়ে দেওয়াতে রাজস্ব কমে যাওয়া এবং গাড়ি আটকের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি হয়।

সম্প্রতি কেএমপিতে প্রতিনিয়ত আটক করা হচ্ছে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন মাহেন্দ্র, সিএনজি, অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ভ্যান। পাশাপাশি নগরীতে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে চলাচলের কারণে ইট ও বালুবোঝাই বিভিন্ন ট্রলিও আটক করা হচ্ছে। যা ট্রাফিক বিভাগ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় থেকে আটক করে নগরীর জোড়াগেটের অস্থায়ী ডাম্পিং ষ্টেশনে রাখছেন। তবে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ও নিহত হওয়ার পর উদ্ধার হওয়া গাড়িগুলো, মাদকদ্রব্যসহ আটক হওয়া গাড়িগুলোর বেশিরভাগই ডাম্পিং করা হয় স্ব স্ব থানায়। যার ফলে অনেক সময় আদালতের মাধ্যমে মালিকপক্ষ বৈধ কাগজপত্র দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নেন।

আবার অইেশ ক্ষেত্রে স্থানীয় সুপারিশ বা পুলিশের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে গাড়ি থানার ডাম্পিং ষ্টেশন থেকে ছাড়ানো হয়। এক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব আদায় নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যায়। বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) মো: আবুল বাসার যায়যাযদিনকে বলেন, কেএমপিতে গাড়ির স্থায়ী ডাম্পিং ষ্টেশন খুবই জরুরী। গাড়ি ডাম্পিং ষ্টেশনে প্রবেশ করানোর পর রাজস্ব আদায় বা সমঝোতার কোন সুযোগ থাকবে না। বিশেষ করে অবৈধ গাড়ি চলাচল অনেকাংশে কমে যাবে। মানুষ গাড়ি ডাম্পিংয়ের ভয়ে রেজিষ্ট্রেশন, ফিটনেসসহ সকল কাগজপত্র আপডেট রেখে চলাচল করবে তখন ঝুকি ও কম হবে।

কেএমপির ট্রাফিক বিভাগের ডিসি রিয়াজ উদ্দীন আহমেদ যায়যাযদিনকে বলেন, কেএমপিতে গাড়ির স্থায়ী ডাম্পিং ষ্টেশন খুবই জরুরী কিন্তু ,তেমন কোন জায়গা না থাকার কারনে জোড়াগেট ট্রাফিক অফিসের পাশে একটি খালি জায়গা আছে সেখানে গাড়ি গুলী রাখা হচ্ছে, যে জায়গাটি নগরীর জোড়াগেটে জেলা প্রশাসকের একটি অস্থায়ী জায়গায় আপাতত সকল আটককৃত গাড়ি ডাম্পিং করা হচ্ছে। বর্তমান কেএমপির কমিশনার মো: মাসুদুর রহমান ভূঞা একটি স্থায়ী ডাম্পিং করার জন্য জায়গা খুঁজে বের করার জন্য কাজ শুরু করেছেন। লবণচরা বা হরিণটানা থানা এলাকায় ভাল জায়গা পেলে স্থায়ী ডাম্পিং ষ্টেশন করা যেতে পাওে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।