“দুই বছর পর চাঞ্চল্যকর রোকসানা হত্যার রহস্য উদঘাটন, প্রধান আসামী গ্রেফতার”

প্রকাশিত: ১১:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : “দুই বছর পর ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার চাঞ্চল্যকর রোকসানা হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং মামলার প্রধান আসামী মোঃ আরিফ হোসেন (২৭)কে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ”।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার এর পক্ষে মেজর কোম্পানী কমান্ডার আখের মুহম্মদ জয় প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত ইং ৩০ এপ্রিল ২০২০ খ্রি. তারিখে ‘ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকায় একজন নারী ধর্ষণসহ শ^াসরুদ্ধ করে হত্যা হয়েছে” এই মর্মে সংবাদ পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনাটি ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উক্ত সংবাদ পাওয়ার পরপরই র‌্যাব-১৪ এর একটি চৌকস দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পরবর্তীতে র‌্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে পলাতক আসামীর সুনির্দিষ্ট অবস্থান নির্নয়ের ভিত্তিতে অদ্য ইং ২০ জুন ২০২২ খ্রি. তারিখ রাত্রি অনুমান ২১.২০ ঘটিকার সময় ভালুকা থানা এলাকা হতে ধর্ষণসহ শ^াসরুদ্ধ করে হত্যামামলার আসামী মোঃ আরিফ হোসেন (২৭), পিতা-বসু মিয়া,সাং-ছলির বাজার, থানা-ফুলবাড়ীয়া, জেলা-ময়মনসিংহকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। মামলার এজাহার পর্যালোচনা এবং র‌্যাব কর্তৃক ছায়া তদন্তের মাধ্যমে জানা যায় গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আরিফ হোসেন এর সাথে ভিকটিম রোকসানা খাতুন এর বিবাহ হয় এবংবিবাহের ২/৩ বছর পর তাদের মধ্যে ডিভোর্সহয় ।

ডিভোর্সের পর হতে ভিকটিম তার বাবার বাড়ীতে বসবাস করা অবস্থায় গত ৩০/০৪/২০২০ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ২১.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম তার বাবার বসত ঘরে শুয়ে পরে। ইং-০১/০৫/২০২০ রাত্রি অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় সেহ্রী খাওয়ার জন্য তার মা ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতর গিয়ে দেখেন ঘরে নাই। খোজাখুজির এক পর্যায়ে ঐ দিনই ভোর ০৫.০০ ঘটিকায় তাদের বসত বাড়ীর উত্তর পাশে জনৈক মোঃ সাইফুল মাষ্টারের নিচু জমির উপর ভিকটিমের অর্ধউলঙ্গ লাশ পাওয়া যায়। প্রথমে এটি একটি অপমৃত্যূ মামলা হলেও ভিকটিমের ময়না তদন্ত রির্পোট পর্যালোচনায় ডাক্তার মোঃ সোয়াব নাহিয়ান, ময়মনসিংহ মেডিকেল ও কলেজ হাসপাতাল মতামত দেন যে,ভিকটিমকে গলা টিপিয়া শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং ভিকটিমের যৌনাঙ্গে পুরুষের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে।

ময়না তদন্তের রির্পোট প্রাপ্তির পর ভিকটিমের বাবা মোঃ হারুন অর রশিদ উল্লেখিত আসামীসহ ০২ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফুলবাড়ীয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহা ফুলবাড়ীয়া থানার মামলা নং ১৮ তারিখ ১৫/১২/২০২০ খ্রিঃ,ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(২)/৩০।

উক্ত ঘটনায় ময়মনসিংহ ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকা সহ সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করে । ঘটনার ০২ বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যবধি মামলার মুল রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকাসহ ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বার মানববন্ধন এবং বিক্ষোপ মিছিল ও বিভিন্ন প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে পলাতক আসামীর সুনির্দিষ্ট অবস্থান নির্নয়ের করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা হতে র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ উল্লেখিত প্রধান আসামী আরিফকে গ্রেফতার পূর্বক র‌্যাব এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুনরায় বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে বসতবাড়ীর উত্তর পাশে ফাকা জায়গায়নিয়ে ধর্ষণ করে ভিকটিমকে গলাটিপে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।

আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ এবং পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ফুলবাড়ীয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।