একাত্তরের এই দিনে চিতলমারীতে হত্যা করা হয় অর্ধশত বাঙালীকে দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২২ বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: আজ পাঁচ আষাঢ়, রবিবার।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই দিনে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামে একটি মাঠের মধ্যে প্রায় অর্ধশত নিরস্ত্র বাঙালীকে নির্বিচারে হত্যা করে পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। সেদিনের সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কাহিনী ২০১৭ সালে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আসলে স্থানীয় প্রশাসন খলিশাখালী গ্রামে “খলিশাখালী বধ্যভূমি” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকেই প্রতি বছর ২৬ মার্চ নিহতের স্মরণে মোমবাতি প্রজ¦লন ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের বাংলা ৫ আষাঢ় রবিবার বেলা ১১টার দিকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মিলে এলাকায় হামলা চালায়। বলেশ্বর নদী দিয়ে গানবোটযোগে তারা প্রবেশ করার পথে নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় গুলির আওয়াজে লোকজন প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক পালাতে থাকে। আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আশ্রয় নিতে আসা লোকজন এবং অনেক গ্রামবাসী চরবানিয়ারী ইউনিয় তথা দশমহল এলাকাকে নিরাপদ আশ্রস্থল মনে করে ভারত যাবার পথে খলিশাখালী ও পূর্ব খড়মখালী গ্রামের মাঠের মধ্যে হোগলা ও নলবনে লুকিয়ে থাকার জন্য আশ্রয় নেয়। এসময় পাকবাহিনী তাদের দেখতে পেয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য নিরীহ লোকজনকে হত্যা করে, যাদের মধ্যে অনেকের বাড়ি পিরোজপুর, নাজিরপুর, উজিরপুর, ও কচুয়াসহ আশপাশের এলাকায় বলে জানা যায়। পূর্ব খড়মখালী গ্রামের প্রবীণ সমাজ সেবক গৌর চন্দ্র মজুমদার সেদিনের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা তুলে ধরে জানান, সেদিন বলেশ্বর নদী দিয়ে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা আক্রমণ চালায়।গুলির শব্দে চারদিক কেঁপে ওঠে। অনেকে খলিশাখালী ও পূর্ব খড়মখালী গ্রামের মাঠের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। এ সময় পাকবাহিনী তাদের দেখে গুলি চালিয়ে খড়মখালী গ্রামের বিমল কান্তি হীরা, ভদ্র কান্ত হীরা, রাজদেব হীরা, যোগেন্দ্র নাথ মজুমদার, মহেন্দ্র নাথ মন্ডল, আদিত্য মজুমদার, নীল কমল মন্ডল, জিতেন মজুমদার, খগেন মন্ডল (খোকা), অমীয় চৌকিদারের ভাইসহ আশপাশের এলাকা থেকে আশ্রয় নেয়া অসংখ্য লোককে সেখানে হত্যা করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিমোহন হীরা জানান, এই দিন আমার পিতা ও বড় ভাইকে খান সেনা ও রাজাকাররা হত্যা করে। একই সাথে তারা আমার কাকাসহ প্রায় অর্ধশত লোককে হত্যা করে। পরে আমি সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মিলে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। এখানে সকল নিহতদের স্মরণে ২০১৭ সালে বদ্ধভূমি ঘোষনা হয়েছে। আমরা দাবী করি এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞকে “চিতলমারী গণহত্যা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক। চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইয়েদা ফায়েজুন্নেসা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ২৬ মার্চ খলিশাখালী বধ্যভূমিতে নিহতের স্মরণে মোববাতি প্রজ্জ্বলন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আগামীতে ৫ আষাঢ়কে চিতলমারী গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষনার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকের কাছে দাবী জানানো হবে। Share this:FacebookX Related posts: চিতলমারীতে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছে ১৬ মুক্তিযোদ্ধা চিতলমারীতে খাবারে চেতনানাশক প্রয়োগে গুরুতর অসুস্থ-৫ চিতলমারীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দায়ের চিতলমারীতে মুক্তিযোদ্ধা খোকনের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত চিতলমারীতে অরক্ষিত বধ্যভূমি, ৪ বছরেও হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ চিতলমারীতে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার চিতলমারীতে সাংবাদিকের ঘরে চুরি চিতলমারীতে সুদখোরের চাপে শিক্ষিকার আত্মহত্যা চিতলমারীতে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত- ২ চিতলমারীতে সড়কের বেহাল দশা,জনদূর্ভোগ চিতলমারীতে গাঁজা গাছসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক চিতলমারীতে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাবে কারা? মরিয়া তরুন প্রজন্ম SHARES Matched Content খুলনা বিভাগ বিষয়: অর্ধশত বাঙালীকেএই দিনেএকাত্তরেরচিতলমারীতেহত্যা করা হয়