চিতলমারীতে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৯:০৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীর কুনিয়া পূর্বপাড়া থেকে পুলিশ ইতি বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ সহ বাগেরহাট অতিরিক্তি পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই গৃহবধূর লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের মা লাইলী বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত ইতি বেগমের ভাসুরের স্ত্রী (বড় জা) সানজিদা বেগম (১৯) কে থানা নিয়ে এসেছে।

এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যে জানাগেছে, উপজেলার কুনিয়া গ্রামের ছদর মীর (৬০) তার ৪ পুত্র আমিনুর মীর (৩৫), মিজানুর মীর (৩২), হাফিজুর মীর (৩০) ও জাহিদুর রহমান মধু (২৭) কে নিয়ে ওই গ্রামে বাস করতেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ছদর মীরের ছোট ছেলে জাহিদুর রহমান মধু বর্তমান একটি মামলায় বাগেরহাট কারাগারে রয়েছে।

এক বছর পূর্বে পিরোজপুর জেলার আরামকাঠি গ্রামের হারান শিকদারের ছোট মেয়ের জাহিদুর রহমান মধুর সাথে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। সোমবার ১১ টায় ছদর মীরের বাড়িতে চুরির অপবাদে অতর্কিত হামলার ঘটনার পর সকলেই প্রানভয়ে বাড়ী ছেড়ে তাদের আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি গিয়ে থাকে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইতি বেগম তার ভাসুরের ছেলে সাগর (১৪) কে নিয়ে নিজের বাড়ীতে ফিরে গিয়ে অবস্থান করে। বুধবার সকাল ১০টায় পার্শ্ববর্তী লোকজন তাদের ঘরের দরজা বন্ধ দেখে পুলিশকে খরব দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।

ইতির ভাসুর হাফিজুর মীর এর স্ত্রী সানজিদা (১৯) জানান, সাগর ও তার দু:সম্পর্কের আত্মীয় সেলিনার সাথে মঙ্গলবার রাতে ফোনে কয়েকবার কথা হয়। তবে সে বাড়িতে ছিলনা বলে জানান।

নিহত ইতির মা লাইলী বেগম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮টায় তার মেয়ের সাথে (ইতি) মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি মেয়ের কাছে ঘরবাড়ি ভাংচুড়ের বিষয় জানতে চায় এবং সাগর সহ দু’জনে ওই বাড়িতে অবস্থান করছে বলে জানতে পারেন। ইতি আরো জানায় তার ভাসুর ও জা রাতে বাড়িতে আসার কথা বলেছে, সেকারণে তারা বাড়িতে অবস্থান করে। তিনি আরো জানান, বুধবার সকাল ৮টায় সাগরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ইতির কথা জানতে চান। সাগর তাকে বলে, সে বাড়ির বাইরে আছে, পরে কথা হবে।

কলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, এটি একটি ন্যাক্কারজনক হত্যা। এ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করবেন বলে আমি আশাবাদী। কলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: বাদশা মিয়া, সাধারন সম্পাদক মেশকাত আলী জানান, হত্যাকান্ডটি দু:খজনক। তবে হত্যার মূল রহস্য পুলিশ উদঘাটন করবেন এবং এর সাথে যারা জড়িত পুলিশ তাদের খুজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।

চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর শরীফুল হক সাংবাদিকদের জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইতির গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে। অপরাধীদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিহতের মা লাইলী বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।