খুলনায় ফুলের বাজারে আগুন তবুও কেনাবেচা হিড়িক

প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১

আতিয়ার রহমান,খুলনা : খুলনা শহর ঘুরে দেখা যায় বসন্তে ভাল বাসার মানুষকে ফুলদিয়ে হাসি ফুটাতে বাজার গুলিতে ফুলের দোকানে কেনাচেচার হিড়িক আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী। বিশ্ব ভালাবাসা দিবস। উৎসবের রঙ ধরেছে ফুল ব্যবসায়ীদের মনে, তাই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মহোৎসবে নগরীর খালিশপুর, দৌলতপুর,ফুল মারর্কেট ফুলের বাজার এখন চাঙ্গা।

করোনা কালীন সময়ে ফুল ব্যবসায় যে ধ্বস নেমে ছিল ভালবাসা দিবসে তার কিছুটা ক্ষতিপূরণ পুঁষিয়ে নিতে ক্রেতাদের দেখে মুখে হাসি ফুটিছে ফুল ব্যবসায়ীদের। বসন্ত বরণ, ভালোবাসা দিবস কেনাবেচা আর আসন্ন একুশে ফেব্রুয়ারীকে সামনে রেখে বেশ ভালো কেনাবেচা করা আশায় দৌলতপুরের মীম গার্ডেন, পলক পুষ্পমালয়, মাধুরী পুষ্প, জুই গার্ডেন সেজেছে বর্নীল সাজে।

করোনা ধাক্কা খেলেও ভালবাসা দিবসে কাংক্ষিত সাড়া মিলবে বলে তারা নতুন করে বিনিয়োগ করছে। বাসন্তী উৎসবের মধ্যে দিয়েই শুরু হচ্ছে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর ফুল ব্যবসায়ীদের কেনাবেচা। ভালোবাসা দিবসের তো কথায় নেই, বাড়বে বাড়তি কেনাবেচার ব্যস্ততা। এছাড়া একুশের প্রথম প্রহর হতে প্রভাত ফেরীর আনুষ্ঠানিকতায় ভালো কেনাবেচার সাড়া মিলবে এমনটাই স্বপ্ন দেখছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। শহর ঘুরে দেখা যায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের দৌলতপুর উত্তরা ব্যাংক চত্ত্বর ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে এখন শোভা ছড়াচ্ছে আমদানি করা ফুল। এসব ফুল দিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের মালা গাঁথা, ফ্লাওয়ার রিং তৈরি ও কাগজ মোড়ানোর কাজ।

তবে গত বছরের চেয়ে এবার ফুলের দাম বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তাই বাড়তি দামে ব্যবসায়ীদের মুখে হাঁসি ফুটলেও বছরের বিশেষ এই দিনে কিছুটা নারাজ হচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিটি ফুল দোকানের সামনেই ক্রেতাদের নজর কাড়া ভিড়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ থাকলে কোথা থেকে উধাও হওয়া তরুণ-তরুণীরা দরদাম করে নিজ নিজ পছন্দের ফুলটি বেছে নিতে ব্যস্ত রয়েছে তা প্রিয় জনকে দেওয়ার জন্য। তাদের এই সরল মনের উপর অনেকটাই কঠোরতা প্রয়োগ করছে ব্যবসায়ীরা। যার কাছ দেখে যে পরিমান রাখা সম্ভব সেই দামই রাখছে।

ফুল দোকান গুলো থরে থরে ফুলের শোভায় মুখরিত। এর মধ্যে লাল গোলাপ, জুঁই, চামেলী, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ নানা রঙ ও বর্ণের ফুল রয়েছে। বেশির ভাগ ফুলই আমদানি করা হয়েছে যশোরের ঝিকড়গাছা গদখালী হতে। দৌলতপুরের মীম গার্ডেনের ফুল বিক্রেতা সুমন জানান, প্রতি বছর ভালবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে প্রায় দ্বিগুন দামে ফুল কিনে আনতে হয়। যে কারণে খরচ খরচা হিসাব করে বাধ্য হয়ে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া করোনা কারণে গদখালির মালিকেরাও ফুলের দাম বেশি রাখছে। পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে।

প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, অন্য রঙের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, রজনীগন্ধার স্টিক ২০-৩০ টাকা, মল্লিকা ৩০ টাকা, ক্যালেনডুলা ৩০ টাকা, জিপসি প্রতি থোঁকা ৪০-৫০ টাকা, জারবেরা প্রতি পিচ ৫০ টাকা, গাঁদা প্রতি পিচ এক টাকার স্থলে ২ টাকা, টাকা ফুলের তোড়া সর্বনিম্ন সাড়ে ৪শ’ থেকে ৬’শ টাকা, জারবেরা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত যত গভীর হবে ততই ফুলের দাম বাড়তে থাকবে । এর মধ্যে তরুণদের পছন্দের শীর্ষে লাল গোলাপ ও জারবেরা রয়েছে বলে জানান।

পয়লা বসন্ত ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত তাদের ব্যবসা জমজমাট থাকে। তারপর অপেক্ষা করতে হয় স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববষের্র । ফুল কিনতে ক্রেতা আসমা বলেন আমি আমার ভালবাসার মানুষকে ফুলদিয়ে নতুন করে বরণ করে নিব। ভালবাসা দিবসের জন্য ফুলের গায়ে আগুন লেগেছে। দু’দিন আগের ১০ টাকার গোলাপ এখন ৫০ টাকায় নিতে হচ্ছে ব্যবসায়ী। এটা অনেকটাই ডাকাতি করা।

উৎসবে দাম নিয়ে মাথা না ঘামালেও ফুলের দাম স্বাভাবিক থাকলে ক্রেতাদের মন আরও ভালো থাকতো বলে মন্তব্য ফুল কিনতে আসা একাধিক ক্রেতাদের । সবমিলিয়ে ভালবাসা দিবসে দৌলতপুরের ফুলের বাজারে যেন আগুন লেগেছে এমনই মন্তব্য ফুল কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতাদের।