খুলনায় ফুলের বাজারে আগুন তবুও কেনাবেচার হিড়িক

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১

সময় নিউজ ডেস্ক :খুলনা শহর ঘুরে দেখা যায় বসন্তে ভালোবাসার মানুষকে ফুলদিয়ে হাসি ফোটাতে বাজারগুলোতে ফুলের দোকানে কেনাবেচার হিড়িক। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালোাবাসা দিবস। উৎসবের রং ধরেছে ফুল ব্যবসায়ীদের মনে। তাই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মহোৎসবে নগরীর খালিশপুর, দৌলতপুর, ফুল মার্কেট, ফুলের বাজার এখন চাঙ্গা।

করোনাকালীন ফুল ব্যবসায় যে ধস নেমেছিল ভালোবাসা দিবসে তার কিছুটা ক্ষতিপূরণ নিতে ক্রেতাদের দেখে মুখে হাসি ফুটেছে ফুল ব্যবসায়ীদের।

বসন্ত বরণ, ভালোবাসা দিবস কেনাবেচা আর আসন্ন একুশে ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে ভালো কেনাবেচা করার আশায় দৌলতপুরের মীম গার্ডেন, পলক পুষ্পমালয়, মাধুরী পুষ্প, জুই গার্ডেন সেজেছে বর্ণিল সাজে।

করোনা ধাক্কা খেলেও ভালোবাসা দিবসে কাক্সিক্ষত সাড়া মিলবে বলে তারা নতুন করে বিনিয়োগ করছে। বাসন্তী উৎসবের মধ্য দিয়েই শুরু হচ্ছে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের ফুল ব্যবসায়ীদের কেনাবেচা। ভালোবাসা দিবসের তো কথায় নেই, বাড়বে বাড়তি কেনাবেচার ব্যস্ততা। এছাড়া একুশের প্রথম প্রহর হতে প্রভাতফেরির আনুষ্ঠানিকতায় ভালো কেনাবেচার সাড়া মিলবে এমনটাই স্বপ্ন দেখছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।

শহর ঘুরে দেখা যায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের দৌলতপুর উত্তরা ব্যাংক চত্বর ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে এখন শোভা ছড়াচ্ছে আমদানি করা ফুল। এসব ফুল দিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের মালা গাঁথা, ফ্লাওয়ার রিং তৈরি ও কাগজ মোড়ানোর কাজ।

তবে গত বছরের চেয়ে এবার ফুলের দাম বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তাই বাড়তি দামে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও বছরের বিশেষ এই দিনে কিছুটা নারাজ হচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিটি ফুল দোকানের সামনেই ক্রেতাদের নজরকাড়া ভিড়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলে কোথা থেকে উধাও হওয়া তরুণ-তরুণীরা দরদাম করে নিজ নিজ পছন্দের ফুলটি বেছে নিতে ব্যস্ত রয়েছে তা প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য।

তাদের এই সরল মনের ওপর অনেকটাই কঠোরতা প্রয়োগ করছে ব্যবসায়ীরা। যার কাছ থেকে যে পরিমাণ রাখা সম্ভব সেই দামই রাখছে।

ফুল দোকানগুলো থরে থরে ফুলের শোভায় মুখরিত। এর মধ্যে লাল গোলাপ, জুঁই, চামেলি, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ নানা রং ও বর্ণের ফুল রয়েছে। বেশির ভাগ ফুলই আমদানি করা হয়েছে যশোরের ঝিকড়গাছা গদখালী হতে। দৌলতপুরের মীম গার্ডেনের ফুল বিক্রেতা সুমন জানান, প্রতি বছর ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে প্রায় দ্বিগুণ দামে ফুল কিনে আনতে হয়। যে কারণে খরচখরচা হিসাব করে বাধ্য হয়ে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া করোনার কারণে গদখালীর মালিকরাও ফুলের দাম বেশি রাখছে। পরিবহণ ভাড়াও বেড়েছে।

প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, অন্য রঙের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, রজনীগন্ধার স্টিক ২০-৩০ টাকা, মল্লিকা ৩০ টাকা, ক্যালেনডুলা ৩০ টাকা, জিপসি প্রতি থোঁকা ৪০-৫০ টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ৫০ টাকা, গাঁদা প্রতি পিস এক টাকার স্থলে ২ টাকা, ফুলের তোড়া সর্বনিম্ন সাড়ে চারশ থেকে ছয়শ টাকা, জারবেরা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত যত গভীর হবে ততই ফুলের দাম বাড়তে থাকবে। এর মধ্যে তরুণদের পছন্দের শীর্ষে লাল গোলাপ ও জারবেরা রয়েছে বলে জানান।

পহেলা বসন্ত ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের ব্যবসা জমজমাট থাকে। তারপর অপেক্ষা করতে হয় স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববষের্র ।

ফুল ক্রেতা আসমা বলেন, আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে ফুল দিয়ে নতুন করে বরণ করে নিব। ভালোবাসা দিবসের জন্য ফুলের গায়ে আগুন লেগেছে। দু’দিন আগের ১০ টাকার গোলাপ এখন ৫০ টাকায় নিতে হচ্ছে। এটা অনেকটাই ডাকাতি করা। উৎসবে দাম নিয়ে মাথা না ঘামালেও ফুলের দাম স্বাভাবিক থাকলে ক্রেতাদের মন আরও ভালো থাকত বলে মন্তব্য ফুল কিনতে আসা একাধিক ক্রেতার। সবমিলিয়ে ভালোবাসা দিবসে দৌলতপুরের ফুলের বাজারে যেন আগুন লেগেছে এমনই মন্তব্য ফুল কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতাদের।