ভরা মৌসুমেও খুলনায় চালের অগ্নিমূল্য

প্রকাশিত: ২:০৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১

আতিয়ার রহমা,খুলনা : খুলনার বাজারে চালের অগ্নিমূল্য। স্থানীয় খাদ্য গুদামগুলোতেও চালের মজুদ একেবারেই তলানীতে।সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যে মিল মালিকরাও সরকারকে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করছে।

এ অবস্থায় খাদ্য বিভাগও অনেকটা নিরুপায় হয়ে পড়েছে। ভোক্তাদের অতিরিক্ত মূল্যে চাল কিনতে হলেও প্রশাসনের তদারকি কাগজে কলমে।

অনুসন্ধানে খুলনা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন মৌসুমের ধান কেনার জন্য সরকারের নির্ধারিত দর হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা।
আতপ ও সিদ্ধ চালের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ টাকা। বাজারের কোনো চালই ৪৫ টাকার নিচে নয়। শ্রেণিভেদে এ চালের দাম ৮০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। ফলে মিল কর্তপক্ষ সরকারের নির্ধারিত দরে চাল দিতে রাজি হচ্ছে না। এবছর ৮৭ জন মিল মালিক সিদ্ধ এবং ৪৮ জন মিল মালিক আতপ চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। জেলার খাদ্য গুদামগুলোতে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন। আমন মৌসুমে সরকার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে সিদ্ধ চাল ১১ হাজার ৭শ মেট্রিক টন, আতপ ১৪শ মেট্রিক টন এবং ধান ২ হাজার ৯শ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৮০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল।

সংগ্রহের এমন অবস্থার বিষয়ে খুলনা জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, বাজারের ধানের মূল্য অনেক বেশি। এবার কৃষকের উৎপাদন খরচ পড়েছে মনপ্রতি ১১শ টাকার মতো। সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৪০ টাকা। ফলে মিলাররাও বেশি দামে ধান কিনে কম টাকায় চাল দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, যেহেতু মিল মালিকরা সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সেহেতু চাল তারা দিতে বাধ্য থাকবেন। তবে এবার হয়তো সময় লাগবে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারকে খাদ্যভিত্তিক সহায়তা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্যে খাদ্য মজুদ বাড়াতে হবে। তবে আবারও উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে আমন ধান কেনার প্রস্তুতি চলছে বিধায় সরকার এবারের সংগ্রহে সফল নাও হতে পারে।

খুলনার আরাফাত রাইস মিলের সত্ত্বাধিকারী আলাউদ্দীন হোসেন জানান, সরকারের নতুন দাম নির্ধারণের পর এখনও কোনো চাল সরবরাহ করা হয়নি।তবে নতুন দামে চাল বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।

সাদিয়া রাইস মিলের সত্ত্বাধিকারী আমিনুর ইসলাম বলেন, বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে, তাও আবার চাহিদার তুলনায় যোগান কম।তার মতে, গেল বোরো মৌসুমে ধান কম হওয়ায় আমনের ওপর চাপ বেড়েছে। যে কারণে ধানের বাজার মূল্য চড়া।এদিকে চলতি মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে জেলা টাস্কফোর্সের সভায় চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে মিল মালিকদের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

কোনো মনিটরিং না থাকায় বাজারে চালের মূল্য বাড়ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, চাহিদা এবং যোগানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাজার তদারকি নিয়মিত করা হচ্ছে। সুষম বন্টন নিশ্চিতের জন্য প্রশাসন কাজ করছে বলে তিনি জানান।