আশার মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২১

বিনোদন ডেস্কঃ ছোটপর্দার অভিনেত্রী আশা চৌধুরী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। তার পরিবার এ মৃত্যুকে পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছে। তারা থানায় মামলা করেছে। তার পরিবার জানায়, আশার সঙ্গে থাকা শামীম আহম্মেদকে নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার রাতে আশা ২০ মিনিটের মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বললেও আড়াই ঘণ্টা পর কীভাবে টেকনিক্যাল গেল এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। পরিবারের দাবি আশাকে নেশা জাতীয় কিছু খাওয়ানো হতে পারে। এ ঘটনায় আশাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালকসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় মামলা করেছেন আশার বাবা। পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আশাকে দাফন করা হয়েছে।

আশার পরিবারের দাবি, ৪ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে আশা তার মাকে ফোনে জানান বনানীতে আছেন। ২০ মিনিটের মধ্যে বাসায় ফিরবেন। আশা ফোন দেওয়ার ৫ মিনিট পরে তার বাবা আবু কালাম আবারও তাকে ফোন দিয়ে সর্বশেষ কথা বলেন। বনানী থেকে কালশী রোড হয়ে আশার মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসায় ফেরার কথা ছিল রাত ১১টার মধ্যে। কিন্তু রাত প্রায় ২টার দিকে মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদ আশার মাকে ফোন দিয়ে বলেন ‘আন্টি, একটু টেকনিক্যাল মোড়ে আসেন।’ কিছুক্ষণ পরে সে আবার ফোন দিয়ে বলেন, ‘আন্টি আশা মারা গেছে।’ আশার মামা দুলাল বলেন, ‘বাইকচালক শামীম আহমেদ পুলিশকে তিন রকম কথা বলেছেন। তাদের ফেরার কথা ছিল কালশী রোড হয়ে। টেকনিক্যাল মোড়ে তিনি কীভাবে গেলেন?’

তিনি জানান, এই প্রশ্ন করলে শামীম জানায় পথ ভুলে গিয়েছিলেন। আশা ঢাকার প্রায় সব রাস্তাই চিনত। তাহলে কীভাবে পথ ভুল হলো? তা ছাড়া বাইকচালক পুলিশকে বলেছেন, রোড পার হতে গিয়ে আশা দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বাইকে থাকা অবস্থায় ট্রাকের ধাক্কায় আশা রাস্তায় পড়ে যায়। তার মাথার ওপর দিয়ে ট্রাকের চাকা চলে যায়।

দুলাল বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ শামীমই নেশাজাতীয় কিছু খাইয়েছিল আশাকে। আশা সুস্থ থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না। আশা রাস্তায় ছিটকে যাওয়ার পর সে একবারও ধরেনি। শামীম আড়াই ঘণ্টা কীভাবে রাস্তায় ঘুরেছে, তার সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। সন্দেহ হওয়ায় তাকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত ট্রাকচালকের নামে মঙ্গলবার রাতে মামলা করা হয়েছে। আশার বাসায় ফেরার পথে আড়াই ঘণ্টার হিসাব না মেলায় শামীমকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।’

মামলার বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, ‘আশার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় বাইকের চালক মো. শামীম আহমেদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত শামীম আহমেদ অভিনেত্রী আশা চৌধুরীর পরিবারের ৬ থেকে ৭ বছরের পরিচিত। তাকে সন্দেহ হওয়ায় অভিনেত্রীর পরিবার শামীমকেসহ সড়ক আইনের ১০৫ ধারায় অজ্ঞাত আরো চারজনকে আসামি করেছে। আমরা মূল ঘটনা উদঘাটন করে অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’

জানা গেছে, চার বোনের মধ্যে আশা চৌধুরী সবার বড়। রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলোজিতে (বিইউবিটি) আইন বিভাগে সপ্তম সেমিস্টারে পড়াশোনা করতেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে তিনি অভিনয় জগতে আসেন। নাটকে অভিনয়, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ছাড়াও তিনি বিজ্ঞাপন ও গানের মডেল হয়েছেন। সম্প্রতি বড় পর্দায়ও নাম লিখিয়েছিলেন আশা। তাঁর অভিনীত ছবিটির নাম ‘বাবার মেয়ে’।