মসজিদের ইমাম হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : জয়পুরহাটের কালাইয়ে বহুল আলোচিত মোহসীন আলী নামে এক মসজিদের ইমাম হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টেগেশন (পিবিআই)। ইতোমধ্যে আদালতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ওই আসামী।

গ্রেফতার কৃত মোঃ শাহীনুর রহমান শাহীন (৩৩ ) নওগাঁ জেলার বদলগাছির চাকরাইল গ্রামের নঈম উদ্দিনের ছেলে। ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় আসামীকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন বগুড়া পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন।

মামলার ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নিহত মসজিদের ইমাম মোহসীন আলীর (২৬) বর্তমান স্ত্রী মোছাঃ শারমীন সুলতানা আসামী শাহীনের সাবেক স্ত্রী ছিলেন। পারিবারিক জটিলতার কারণে শাহীনের সাথে দীর্ঘ ১২ বছরের সংসার ছেড়ে তিনি মোহসীনের সাথে সংসার বাঁধে। এতে ক্ষিপ্ত হন হত্যা মামলার আসামী শাহীন।

শারমীন ও শাহীন দম্পত্তির ঘরে একটি কন্যা শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যাওয়ার পর থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যা সন্তানটি শাহীনের পরিবারেই থাকতো। তবে বিপত্তি বাঁধে মেয়ের স্কুলের উপবৃত্তির টাকা উঠানোর সময়। মেয়ের উপবৃত্তির টাকার জন্য তার এবং সাবেক স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু সংসার আলাদা হয়ে যাওয়ায় এসব কাগজপত্র দিতে অসম্মতি জানায় শারমীন। এর ফলে শাহীনের মাঝে আরো ক্ষোভের জন্ম নেয়।

এক পর্যায়ে শারমীনের বর্তমান স্বামী মোহসীন আলীর সাথে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মসজিদের ইমাম মোহসীনকে সুকৌশলে জেলার কালাই থানার মোলামগাড়ী বাজারে ডেকে আনে। সেখানেও তার মেয়ের জন্য মোহসীনের কাছ থেকে সাবেক স্ত্রীর কাগজপত্র চেয়ে ব্যর্থ হলে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন শাহীন। এসময় মোটরসাইকেলে রাখা ধারালো লোহার পাত দিয়ে মাথায় আঘাত করে মোহসীনকে হত্যা করে। পরে তার লাশটি করিমপুরের একটি ধানক্ষেতে ফেলে দেয়।

পুলিশ সুপার মোঃ আকরাম হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডে ঘটনায় নিজেকে আড়াল করতে আসামী শাহীন প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। পরবর্তীতে নিজের ব্যবহৃত সিম কার্ড রাস্তার পাশে ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত লোহার পাত নদীতে ফেলে দেয়। এরপর থেকেই সে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তবে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা তাকে গাজীপুরের গাছা থানার হাজীরপুকুর থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

গত ৭ জুন রাত সাড়ে ৯টায় কালাইয়ের করিমপুর এলাকায় ধারালো লোহার পাত দিয়ে আঘাত করে মোহসীন আলী নামে এক মসজিদের ইমামকে হত্যা করে শাহীনুর রহমান শাহীন। এর পরদিন বুধবার (৮ জুন) সকালে উপজেলার করিমপুর ত্রিমোহনী মোলামগাড়ী সড়কের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।