জয়পুরহাটে ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় কলেজছাত্রীকে হত্যা

প্রকাশিত: ১১:১৩ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ধর্ষণের বাধা দেওয়ায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে আয়েশা ছিদ্দিকা (২২) নামে এক কলেজছাত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি পুলিশের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

পুলিশ জানায়, নিহত কলেজছাত্রীর বড় ভাই মোস্তাক হোসেন বাদী হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে পাঁচবিবি থানা পুলিশ রাতেই উপজেলার মাঝিনা এলাকা থেকে শংকর মহন্তের ছেলে রনি মোহন্ত (৩০) ও পাশের আয়মাপাড়া গ্রামের খোরশেদ মন্ডলের ছেলে কামিনি জাহিদ (৩২) নামে দুজনকে গ্রেফতার করে।

জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়শার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে তার বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এতে অধ্যক্ষ প্রফেসর দেবাশীষ দত্তসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

রোববার জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে আয়শা সিদ্দিকার ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ধর্ষণের বাধা দেওয়ার কারণে কলেজছাত্রী আয়েশা ছিদ্দিকাকে (২২) শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত রনি ও জাহিদ দোষ স্বীকার করেছে। আরও কোনো ঘটনা আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের মোজ্জামেল সরকারের মেয়ে। সে জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আয়শার মা সাত বছর আগে মারা যান এবং বাবা ঋণ খেলাপির দায়ে জেল হাজতে আছেন। বাবা-মা না থাকায় নিহত আয়শা তার ভাই মোস্তাকের সংসারে থাকতো। তাকে রেখে তার ভাই স্ত্রী সন্তানসহ ঈদের দাওয়াত খেতে বদলগাছী শ্বশুরবাড়িতে যায়।

তিনি আরও জানান, বাড়িতে কেউ না থাকায় আয়েশা পাশের বাড়ির দুই কিশোরী মেয়েকে অন্য রুমে রেখে সে পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। এই সুযোগে শুক্রবার গভীর রাতে রনি ও জাহিদ বাড়ির প্রাচীর টপকে আয়েশার রুমে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আয়েশার বাধার মুখে ব্যর্থ হয়ে তারা তার মুখে কাপড়গুজে দেয় এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে ধর্ষণ হয়েছে কি না তা জানা যাবে।

সংবাদ সন্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফারজানা হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোসফেকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাঁচবিবি সার্কেল) ইশতিয়াক আলমসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।