‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র সর্দারসহ ১১ ডাকাত গ্রেফতার দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৭:২৪ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২২ নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার সাভারে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র সর্দার শামীমসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সাভার থানার বালিয়ারপুর মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাহিনীর মূলহোতা মো. শামিম ওরফে সব্দুল (৩০), মো. আনিসুর রহমান ওরফে ঠান্ডা (৪৫), মো. সালাউদ্দিন (২৩), মো. ইখতিয়ার উদ্দিন (৩১), মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), মো. জাহাঙ্গীর সরকার (৪০), মো. সজিব ইসলাম (২৫), মো. জীবন সরকার (৩৪), শ্রী স্বপন চন্দ্র রায় (২১), মো. মিনহাজুর ইসলাম (২০) ও শ্রী মাধব চন্দ্র সরকার (২৬)। এ সময় তাদের নিকট থেকে বিদেশি পিস্তল একটি, পাইপগান একটি, ওয়ান শুটারগান দু’টি, গুলি ছয় রাউন্ড, ম্যাগাজিন একটি, শাবল একটি, রশি তিনটি, লোহার রড একটি, চাপাতি একটি, রামদা দু’টি, চাইনিজ কুড়াল একটি, করাত একটি, হাউজ কাটার একটি, ছুরি দু’টি, টর্চ লাইট দু’টি, ব্যাগ ১১টি, হ্যাক্সো ব্লেড দু’টি, দা একটি, লেজার লাইট দু’টি, প্লাস দু’টি, দেশি কুড়াল একটি এবং হাতুরী একটি উদ্ধার করা হয়। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনীর মূলহোতা শামীম ওরফে সব্দুল ও তাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড আনিসুর ওরফে ঠান্ডা। তাদের নাম অনুসারে এ বাহিনীর নাম রাখা হয় ঠান্ডা শামীম। এ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ও সড়কে ডাকাতি, গাছ কেটে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী বাস, গরুবাহী ট্রাক, মালবাহী ট্রাক ও বিভিন্ন মালামালের গুদামে ডাকাতি করে আসছিল। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৫ জন।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়াও এ চক্রের সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজরদারি করে মূল ডাকাত দলের কাছে তথ্য সরবরাহ করতেন। এসব ডাকাতির ঘটনায় শামীম ও আনিসুর ওরফে ঠান্ডা একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জেল হাজতে থাকার সময় তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে জামিনে বের হয়ে তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন। এছাড়াও তারা যে এলাকায় ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে ওই এলাকার স্থানীয় অপরাধী, মাদক কারবারি, পরিবহন শ্রমিক ও নৈশপ্রহরীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্পর্ক গড়ে তোলে। ডাকাতিই হচ্ছে তাদের মূল পেশা।’ র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘মহাসড়কে ডাকাতি করার জন্য একটি চক্রের সদস্যরা অন্ধকার রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকতেন। পূর্ব পরিকল্পিত নির্ধারিত স্থানের নিকটবর্তী স্টেশনে টার্গেট বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস সম্পর্কে সংকেত দিতেন ডাকাত দলের সদস্যরা। সংকেত পাওয়া মাত্রই চক্রের অন্য সদস্যরা দ্রুত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখতেন। পরে চালক ও যাত্রীদের অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়ে যেতেন তারা। তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার ইখতিয়ার উদ্দিন এই বাহিনীর অন্যতম সদস্য। তিনি পেশায় চালক। এছাড়া গ্রেফতার সাইফুল পেশায় রাজমিস্ত্রি। ডাকাতি করার সময় সে তালা ভাঙা, দেওয়াল ভাঙা, গাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করাসহ ডাকাতির মালামাল বিক্রির দায়িত্ব পালন করতেন।’ খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেফতার মিনহাজুল ও মাধব চন্দ্র ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র তথ্যদাতার কাজ করতেন। তারা মহাসড়কে ডাকাতির সময় গাছ কেটে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও লেজার লাইটের আলো ফেলতেন। গ্রেফতার জাহাঙ্গীর পেশায় ইট ভাটার শ্রমিক, সজীব ও জীবন পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক, স্বপন চন্দ্র পরিবহন শ্রমিক। তারা এসব পেশার আড়ালে ডাকাত দলের সঙ্গে ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। ডাকাতি শেষে তারা আবার নিজ নিজ পেশায় নিয়োজিত হয়ে পড়েন।’ তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার আনিসুর ওরফে ঠান্ডা ২০০৪ সাল থেকে ডাকাতি করে আসছিল। ২০১৬ সালে শামীমের সঙ্গে তার পরিচয়ের সূত্রে তারা একসঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করতেন। এছাড়াও ঠান্ডা শামীম বাহিনী তাদের ডাকাতির ধরণ এবং চাহিদা অনুযায়ী ভাড়ায় লোকবল সংগ্রহ করে থাকেন। এই বাহিনী এরই মধ্যে গাইবান্ধা, সাভার, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল এলাকায় বহু ডাকাতি করেছে। তারা বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন। ডাকাতি থেকে প্রাপ্ত মালামালের অর্ধেক আনিসুর ওরফে ঠান্ডা ও শামীম ভাগ করে নিতেন। তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে তারা বগুড়ার শেরপুর এলাকার মহাসড়কে ডাকাতির কথা স্বীকার করেন। এছাড়াও তারা সাভারের হেমায়েতপুরে একটি ব্যাটারির কারখানায় ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তারা গ্রেফতার হন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেফতার ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র মূলহোতা শামীমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। এছাড়া আনিসুর ওরফে ঠাণ্ডার বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মলনে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, র্যাবের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তাসহ অন্যান্য র্যাব সদস্যরা উপস্হিত ছিলেন। Share this:FacebookX Related posts: জয়পুরহাটে বিদেশী ও দেশীয় অস্ত্রসহ আটক ২ নায়ক-নায়িকাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক, আটক ২ কিশোরগঞ্জে ১৯৫ পিসইয়াবা’সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক কিশোরগঞ্জে ৩৭ কেজি গাঁজা, জাল টাকা ও ইয়াবাসহ মাদকের গডফাদার আটক র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ধর্ষণ মামলার আসামি নিহত ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীসহ গ্রেফতার ৩ রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৪১ আশুলিয়ায় গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মীকে অপহরণ: অস্ত্রসহ ২ যুবক গ্রেপ্তার বিদেশি পিস্তলসহ সন্ত্রাসী আটক লবণভর্তি ট্রাক থেকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ৩ ভূঞাপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার ২ SHARES Matched Content অপরাধ বিষয়: ১১ ডাকাত গ্রেফতারঠান্ডাশামীম বাহিনী'রসর্দারসহ