দিনাজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার একটি হত্যা মামলায় ১৩ বছর পর তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড ও চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

এছাড়াও অপর এক ধারায় সাত জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

সোমবার বিকেলে দিনাজপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-(২)র বিচারক মেহেদী হাসান মন্ডল এ আদেশ প্রদান করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার গরপিংলাই গ্রামের শরীফুল ইসলাম (৪৩), রেজাউল করিম বাবু (৪৮) ও আতোয়ার ওরফে আতর আলী (৫১)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গোলাম রব্বানী (৪৪) ও একরামুল হক (৫১), সাঈদ আলী (৫৮) ও জাহাঙ্গীর আলম (৪৪)।

আদালতের সহকারী পিপি মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল এ তথ্য জানান।

মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার গরপিংলাই গ্রামের সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী একই এলাকার আজাহার আলীর মেয়ে নারগিস নারী নির্যাতনের মামলা করে। গত ২০০৯ সালের ০২ আগষ্ট ওই মামলার রায়ে সাইফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। এই মামলা চলাকালে সাইফুল ইসলাম তার জমিজমা বড় ভাই শহীদুল ইসলামের ছেলে তৌহিউল ইসলাম বাবু ও হুমায়ুন কবীরের নামে লিখে দেয়।

মামলার রায়ের ১৮ দিন পর সন্ধ্যায় হুমাযুন কবীর তার মুদি দোকান থেকে বের হয়ে জয়নগর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর সে আর বাড়িতে ফেরেনি। পরের দিন এমআইবি নামক ইটভাটার সামনে ইটের স্তুপের নিচে হুমায়ুন কবিরের রক্তমাখা মরদেহ পাওয়া যায়। তাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। মরদেহ দেখে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

মরদেহ উদ্ধারের দিনই নিহতের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ওই জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই হুমায়ুন কবীরকে হত্যা করেন আসামিরা। এ ঘটনায় দীর্ঘ ১৩ বছর পর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সকলেই নিহত হুমায়ন কবীরের চাচা সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নারগিসের ভাই ও ভাতিজা।

মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল বলেন, মামলায় বাদিসহ ১৬ জন স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আসামিদের মধ্যে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আমরা অত্যন্ত খুশি।

তিনি বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে জয়নগর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হুমায়ুনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদি হয়ে মামলা করলে পুলিশ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। সাক্ষ্য, প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।