জয়পুরহাটে সম্পত্তির লোভে শিশু দেবরকে হত্যা করলো ভাবি

প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্পত্তির লোভে শিশু দেবর লাবিবকে (৪) শ্বাসরোধে করে হত্যা করলো ভাবি। মঙ্গলবার সকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সাতনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত ভাবি রিমা খাতুনকে (১৮) গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাতনা গ্রামের পিতা জাহের আলীর দুই ছেলে। মেস্তাউল (২২) ও আব্দুল্লাহ লাবিব (৪)। মেস্তাউলের স্ত্রী রিমা খাতুন বিয়ের পর থেকে প্রায় শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে ঝগড়া বিবাদে লেগে থাকতো। ফলে বাধ্য হয়ে জাহের আলী তার বড় ছেলে মেস্তাউলকে বাড়ির পাশে আলাদা স্থানে বাড়ি করে দেন। জাহের আলীর সংসারে ছোট ছেলে লাবিব সকলের আদরের। ভাবিও তাকে আদর করে। কিন্তু সে আদর ছিল লোক দেখানো। সম্পত্তি কি জিনিস তা বুঝে ওঠার আগেই নির্মমভাবে বড় ভাবির হাতে জীবন প্রদীপ নিভে গেল লাবিবের।

মঙ্গলবার সকালে জাহের আলী তার বড় ছেলে মেস্তাউলকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে ধান কাটার জন্য যান। এই সুযোগে পূর্ব পরিকল্পনায় অনুযায়ী ভাবি রিমা খাতুন তার একমাত্র দেবরকে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। ভাত খাওয়ার পরে রিমা শ্বাসরোধ করে লাবিবকে হত্যার পর নিজ ঘরের ভিতর লেপ দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে রিমার শ্বাশুড়ি তার শিশু ছেলেকে নিয়ে যাবার জন্য বড় ছেলে মেস্তাউলের বাড়িতে আসে। বড় ছেলের বাড়িতে না পেয়ে শিশু লাবিবকে খুঁজতে থাকে তার মা। একপর্যায়ে লাবিবের লাশ ঘরের ভিতর দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং লাবিবের মরদেহ উদ্ধার করে।

পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব জানান, রিমা তার দেবর লাবিবকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিশু লাবিবকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভাবি রিমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পাঁচবিবি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইশতিয়াক আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, শ্বশুরের সম্পত্তি দুই ভাইয়ের মধ্যে ভাগ হবে। আর দেবরকে যদি হত্যা করে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে স্বামী মেস্তাউল একাই সব সম্পত্তির মালিক হবেন। এমন পরিকল্পনা থেকে শিশু দেবরকে হত্যা করে ভাবি রিমা খাতুন। এ ছাড়াও হত্যার পেছনে আরও কোনো ঘটনা রয়েছে কি না তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে।