হিটশকে সোঁনালী ধানের স্বপ্ন শেষ

প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : অতিরিক্ত গরমে মানুষ যেমন হিটস্ট্রোক করে, তীব্র তাপদাহে ধান গাছও এমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেটাকে হিটশক বা হিট ইনজুরি বলে।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেওখোলা, বালিয়ান, কুশমাইল, পুটিজানা, বাকতা, কালাদহ, রাঙ্গামাটিয়া, রাধাকানাই ইউনিয়নের পলাশতলী, গোবিন্দপুর গ্রামের মাঠ ঘুরে এমটাই দেখা গেছে।

ধানের বাম্পার সম্ভবনাময় ফসলের মাঠের পর মাঠ শীষগুলো সাদা হয়ে গেছে। দৃশ্য দেখে মাথা ঘুরে যায়। কৃষককে শান্তনা দেবার ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না। আগাম আটাশ জাতের ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা।

তাদের মতে, ‘জীবনেও এমন গরম বাতাস দেখি নাই। সকালে উঠে দেখি ক্ষেতের ধান মরে গেছে। আমরা কী খেয়ে বাঁচব, আমাদের কোন উপায় নেই। ঋণ করে গিরস্থি করেছি। এখন কি করে ঋণ দেব? কীভাবে সারা বছর স্ত্রী, সন্তানের ভরণপোষণ করব? ক্ষেতের পর ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।’

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুর রহমান বলেন, মার্চ মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে দিনের বেলার তাপমাত্রা প্রায়শই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেড়ে যাচ্ছে যা ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও সারাদেশে বা বিছিন্ন ভাবে এ সময় কালবৈশাখী ঝড় বিশেষ করে বৃষ্টি ছাড়া শুধু গরম বায়ু প্রবাহ দিনে/রাতে প্রায়শই হচ্ছে যার ফলে কালো দানা বিশিষ্ট শীষ বা অনেক ক্ষেত্রে সাদা শীষ বিশিষ্ট চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ সময় বোরো ধানের যে সকল জাত ফুল ফোটার পর্যায়ে আছে বা এখন ফুল ফুটছে বা সামনে ফুল ফুটবে সে সকল জমিতে পানি ধরে রেখে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে হিটশক/ হিট ইনজুরি থেকে রক্ষার পরামর্শ দিচ্ছি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত রোববার (০৪ এপ্রিল) আকস্মিক ভাবে গরম বাতাস একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পর দিন থেকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে জরিপ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২২০ হেক্টর জমির বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের জমিতে সার্বক্ষণিক পানি রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে।