পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীকে ফাঁসানোর অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে এক নারী পরিদর্শকের স্বামীকে ফাঁসনানোর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (২৪ মার্চ) মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কাছে এ অভিযোগ করেন নারী পরিদর্শক হোসনে আরা বেগম।বর্তমানে তিনি রাজশাহীর চারঘাটে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্তি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার মূল কর্মস্থল ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক। হোসনে আরার অভিযোগটি যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ খন্দকার গোলাম ফারুক সুপরিশ করেছেন।

অভিযোগ ওঠা দুই ওসির মধ্যে একজন হলেন মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় কর্মরত ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এবং অপরজন হলেন দামকুড়া থানায় কর্মরত ওসি মাহবুব আলম। তাদের মধ্যে মাহবুব আলম ছিলেন অভিযোগকারী নারী ওসি হোসনে আরা বেগমের সাবেক স্বামী। ২০১৮ সালে মাহবুবের সঙ্গে হোসনে আরার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

অভিযোগে ওই নারী পরিদর্শক উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলমের সাথে আমার বিয়ে হয়। মাহবুব আলম বর্তমানে মহানগরীর দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনে আমি নিরুপায় হয়ে ২০১৮ সালে মাহবুব আলমের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাই। এরপর থেকে মাহবুব আলম আমাকে তার সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমার পারিবারিকভাবে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ললিতাহার এলাকার আব্দুল ওদুদের ছেলে মামুন হুসাইনের সঙ্গে বিয়ে হয়।

পরিদর্শক হোসনে আরা আরো লিখেন, আমার স্বামী পেশায় একজন সাংবাদিক। কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সে জড়িত নয়। ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মণ তার ব্যক্তিগত নোংরা উদ্দেশ্য আমার ওপর প্রয়োগ করতে না পেরে এবং ওসি মাহবুব আলম আমার ওপর পূর্ববর্তী আক্রোশ থেকে আমার জীবনটা ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় চালান দিয়েছে। আমি পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে যেন হেয় প্রতিপন্ন হই সে জন্যই এই ধরনের কাজ করেছে।

আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন নারী সদস্য। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশবশত আমার এবং আমার স্বামীর ওপর এই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মণ এবং দামকুড়া থানার ওসি মাহবুব আলমসহ আমার স্বামীকে যারা থানায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিনীত আবেদন করছি।

এই অভিযোগ সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক পুলিশ বাহিনীর এই ধরনের নোংরা চিন্তাধারার মানুষদের বিচারের আশায় আপনার বরাবরে অভিযোগ দাখিল করলাম।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ওসি মাহবুব আলমের সঙ্গে যোযোগ করা হলে তিনি এই ধরনের ঘটনা সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে হোসনে আরার বিয়ে হয়েছিল। তার পর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এরপর থেকে তার সেঙ্গ আমার কোনো যোগাযোগ নাই। সে আমাকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।

ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘হোসনে আরার সঙ্গে কোনো আপত্তিকর কথা হয়নি। তার স্বামীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু স্বামীকে বাঁচাতে সে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।’