সান্তাহার জংশন রেলওয়ে গেইট যেন মরন ফাঁদ

প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১

নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ ও বগুড়া এই দুই জেলার মোহনায় অবস্থিত উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহি রেলওয়ে স্টেশন সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশন। রেলস্টেশনকে ঘিরে ওঠা সান্তাহার শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে রেললাইন। নওগাঁসহ সান্তাহার শহরের পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে চলাচলের পথের মধ্যে প্রধান বাধা হচ্ছে রেলগেইট বা রেলক্রসিং।

প্রতিদিন এই স্টেশন দিয়ে ৩০-৩৫টি ব্রড ও মিটার গেইজ যাত্রীবাহী ট্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। আর যে কোন ট্রেন চলাচলের প্রায় ১০মিনিট পূর্বে রেলগেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন গেইটের দুই পাশেই সৃষ্টি হয় যানযটের। এমনকি পায়ে হেটে চলাও মুশকিল হয়ে যায়। যার কারণে দিনের সিংহ ভাগ যানজট লেগেই থাকে রেলগেইট এলাকায়। বর্তমানে নিয়মিত দীর্ঘ যানজটে নাকাল শহরবাসী। সকাল ও বিকেল মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে গেলে রেলগেইটের যানজট আরও ছড়িয়ে যায় শহরের ভিতর পর্যন্ত। দিনে প্রায় ৬০বার রেল গেইট বন্ধ থাকার কারণে পুরো সান্তাহার শহরে যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময়।

দৈনিক সময় সংবাদ
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারণে যানজটের মাত্রা বেড়েছে। প্রতিদিন আন্ত:নগর বিভিন্ন রুটের ২৮টি ট্রেন সান্তাহার জংশন স্টেশনে আসে। এছাড়াও কমিউটার ট্রেন চলাচল করে ১২টি ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে ১০থেকে ১২টি। যার কারণে সারা দিন ৬০থেকে ৭০ বার রেল ক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধক ফেলা হয়। প্রতিবার গড়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট করে রেলক্রসিংয়ের বার ফেলে রাখা হয়।
দৈনিক সময় সংবাদ
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন সান্তাহার রেলগেট এলাকায় রেল লাইনের ওপর আড়াআড়ি বসে আছেন ফল বিক্রেতারা। বিভিন্ন ট্রেন কাছাকাছি এলে ফলের ঝুড়িগুলো একটু পাশে সরিয়ে নেওয়া হয়। তখন ফলের ঝুড়িগুলো তুলে রেললাইনের পাশে রাখা হয়। ট্রেন আসার আগে রেলক্রসিংয়ের দুইটি প্রতিবন্ধক ফেলার আগে বেঁধে যায় হুড়োহুড়ি।
দৈনিক সময় সংবাদ
পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানসহ যানবাহনগুলো দ্রুত পারাপারের চেষ্টা করতে থাকে। প্রতিবন্ধকগুলো ফেলার পর হুড়োহুড়ির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। মোটরসাইকেল আরোহীদের অনেকে সেগুলো উঁচু করে বের হয়ে যান। হাতে সময় কম থাকা ও ব্যস্ততার কারণে এই সুযোগ নেন পথচারীরাও। বাধ্য হয়ে অনবরত হুইসেল বাজিয়ে ধীর গতিতে চলতে থাকে ট্রেনগুলো।

সান্তাহার জংশন স্টেশন মাস্টার হাবিবুর রহমান জানান প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে যানজট আরও দীর্ঘ হয়। শহরের প্রবেশদ্বার রেলগেটের উপর দিয়ে রাস্তাটি তৈরি হওয়ার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো রেলক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধকগুলো অনেক সময় ২০মিনিটেরও বেশি পড়ে থাকে। ট্রেন চলে গেলেও জটলা কাটে না।
দৈনিক সময় সংবাদ
রেলগেট এলাকা থেকে যদি বাইপাস রাস্তা করা হয় অথবা ফ্লাইওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হয় তাহলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাই চলাচলের জন্য দ্রুত কোন বিকল্প পথ তৈরি করা করা না হলে আগামীতে এই দুর্ভোগ আরো চরম আকার ধারন করবে।