হালুয়াঘাটে তিন মাস যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা

প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২০

জোটন চন্দ্র ঘোষ, হালুয়াঘাট : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রায় তিন মাস যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও এর প্রাদুর্ভাবজনিত যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার জন্য সরকারি নির্দেশ দেওয়া হলেও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় কর্মরত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন মোল্লা সরকারি নির্দেশ মানচ্ছেন না। রোববার (৩১মে) সারা দেশের মাধ্যমিক ও সমমানের পরিক্ষার ফল প্রকাশ করা হলেও সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অনুপস্থিত রয়েছেন কর্মস্থলে।

সরেজমিনে অত্র উপজেলার এসএসসি ও সমমানের ফল জানতে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, হালুয়াঘাট উপজেলায় দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল ৪৯২জন, পাশ করেছেন ৪২২ জন ,পাশের হার- ৮৫.৭৭% এপ্লাস পেয়েছে ১ জন, ভোকেশনাল পরীক্ষার্থী ছিল ২১৮ জন ,পাশ করেছেন ১৪৮ জন, পাশের হার- ৬৭.৮৮% এপ্লাস পেয়েছে ১ জন, এবার এস.এস.সি মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩,২১৪ জন পাশ করেছেন ২,২৩৪ জন পাশের হার- ৬৯.৫০% এপ্লাস পেয়েছেন ৬৩। আজকের ফলাফলের তথ্যটুকু জানানে না মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা ।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, আজকের ফলাফলের তথ্য তিনি অবগত নন। কর্মস্থলের অনুপস্থিতির বিষয়ে বলেন, তিনি আজ সমস্যার কারণে অফিসে আসেন নি। প্রায় তিন মাস যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে বলেন, প্রথমে তার এক ভাই মারা গিয়েছিলেন। পরে তার আম্মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ডাইবেটিসের রোগী করোনা ভাইরাসের কারণে তাই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে লিখিত ভাবে কোন ছুটি নেননি। মৌখিক ভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেছেন। আগামীকাল সকালে অফিস করবেন। তিনি বর্তমানে রাজধানীতে অবস্থান করছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এসএসসির ফল প্রকাশের দিন অব্যশই শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেনের কর্মস্থলে থাকার প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। উক্ত কর্মকর্তা তিন মাস যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে বলেন, লিখিত ভাবে কোন ছুটি নেননি। মৌখিক ভাবে অসুস্থতার কথা জানিয়ে ছিলেন। করোনা ভাইরাসকালীন সময়ে লোকাল প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যাতীত তিনি ছুটি দিতে পারেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট থেকে ছুটি নিয়েছেন কিনা তা তিনি অবগত নন বলে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বার বার মুঠোফোনে নিয়মিত কর্মস্থলে আসার কথা বললেও অনেকেই কর্মস্থলে ফিরেছেন। কিন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা কিছুতেই কর্ণপাত করছেন না। এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিনও তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। লিখিত বা মৌখিক ভাবে তিনি কোন ছুটি মুঞ্জুর করেন নি।