নদী-খাল খননের ফলে গফরগাঁওয়ে কৃষিতে নতুন বিপ্লব

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাঠের পর মাঠ ফসলের অপরুপ চিত্র। সোনালী ধানে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। কৃষক ফসলের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যে জমিগুলো একসময় অনাবাদি ছিল, বর্ষায় তলিয়ে যেত সেই মাঠের মধ্যে এখন ফসল দোল খায়।

জানা যায়, গফরগাঁও উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর মাধ্যমে কয়েকটি খাল ও নদী খননের ফলে কৃষিতে বিপ্লব হয়েছে। বেড়েছে আবাদি জমির পরিমাণ ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার ‘হাফাইল বিলের খাল সংস্কার’ প্রকল্পে নয় কি. মি. খাল পুনঃখনন করায় উপজেলার লংগাইর, গফরগাঁও ও মশাখালী ইউনিয়নের ১৪টি বিলের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে।

উপজেলার আন্ধাপুরি খাল খননের প্রকল্পটি সালটিয়া ইউনিয়নের আন্ধাপুরি বিল থেকে উৎপত্তি হয়ে রৌহা, পুখুরিয়া, দৌলতপুর ও বখুরা মৌজার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যশরা ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে শিলা নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। পলি দ্বারা ভরাট হয়ে খালটি অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল। এর ফলে বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি বা ভারি বর্ষণের ফলে বড় বিল ও খালের দু’পাশের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যেত। এসব আবাদি জমি বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধতার কারণে পানিতে নিমজ্জিত থাকার কারণে কৃষকরা বছরে একটির বেশি ফসল ফলাতে পারতেন না। এ খাল খননের ফলে হাজারো কৃষকের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তিনটি মৌসুমেই কৃষক ফসল ফলাতে পারছেন।

এছাড়াও, লংগাইর ইউনিয়নে শীলা খালটি বাগবাড়ী গ্রাম থেকে মশাখালী ইউনিয়নের শীলা রেল ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় তিন কি. মি. খাল খননের ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে, উপজেলার বুক চিরে বয়ে চলা শীলা নদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পুনঃখনন করা হয়েছে। এ নদী খননের ফলে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।

পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের মরা খাল খননের ফলে এখন আর তাদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে বাম্পার ফলন হচ্ছে। কৃষকরা ক্ষুদ্র সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে খাল থেকে জমিতে পানি নিয়ে একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারছেন।

পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের খনন চলমান আছে। এই প্রকল্পটি শেষ হলে সারা বছর নদে পানি থাকবে। এতে উপকৃত হবে কৃষক।

সুবিধাভোগী কৃষক ঘাগড়া গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, আমাদের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি জমিতে সেচের সুবিধা বৃদ্ধি করতে খাল খনন করে দিয়েছেন। দোয়া করি তিনি আবারও এমপি হয়ে আমাদের জন্য আরও কাজ করবেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বাদল বলেন, সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের সহযোগিতায় খাল ও নদীগুলো পুনঃখনন করা হয়েছে। তিনি কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে অনেক কাজ করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, খাল ও নদী খননের ফলে আবাদি জমির পরিমাণ বেড়ে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। জলাবদ্ধতার দূর হয়ে কৃষকের সেচের সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপজেলা বিএসডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী কাউসার বলেন, আরও কিছু প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই এগুলো বাস্তবায়ন হবে। এতে গফরগাঁও ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এই সেচ প্রকল্পের আওতায় আসবে এবং মশাখালী ও লংগাইর ইউনিয়নের ৪০ ভাগ জমিতে ভূ-উপরিস্থ পানি দিয়ে কৃষক সেচ দিতে পারবেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আমার সংসদীয় এলাকায় তিনি কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন তাই গফরগাঁওবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এই প্রকল্পসমূহের মাধ্যমে পতিত জমি আবাদি হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।