ভ্যান গাড়ির জন্য দুই বন্ধু মিলে পারভেজকে খুন

প্রকাশিত: ৬:১৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদারীপুর জেলার শিবচরে ভ্যানচালক পারভেজ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের ২ সপ্তাহ পর নিহতের দুই বন্ধু হৃদয় মাদবর ও আজিজুল মুন্সীকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বের হয়ে আসে।
গ্রেফতারকৃত হৃদয় মাদবর শিবচরের সন্নাসীরচর ইউনিয়নের রাজারচর শরীফকান্দি গ্রামের সালাম মাদবরের ছেলে ও আজিজুল মুন্সি একই ইউনিয়নের রাজারচর গোবিন্দ মাদবরকান্দি গ্রামের নুরু মুন্সির ছেলে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে মাদকসেবীরা পারভেজকে নিয়ে হত্যা করে ভ্যানটি মাত্র ১০ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করে। ওই রাতেই হত্যাকারীরা ওই টাকা নেশা করে ও জুয়া খেলে খরচ করে ফেলে। এমনই চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক তথ্য বের হয়ে এসেছে পারভেজ হত্যাকাণ্ডে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর সকালে শিবচরের বন্দরখোলার ইউনিয়নের রহমতউল্লাহ হাওলাদারকান্দি শশুরবাড়ি থেকে প্রতিদিনের মতো ভ্যান নিয়ে বের হয় একই উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের ফকির রনাই মুন্সিকান্দি গ্রামের মো. বাবুল ফকিরের ছেলে পারভেজ ফকির (২৪)। রাতে পারভেজ বাড়িতে না আসায় পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি। পরদিন ফরিদপুরের ভাঙ্গার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের তীরবর্তী ধানক্ষেত থেকে পারভেজের লাশ উদ্ধার করে ওই থানা পুলিশ।

প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসেবে থাকলেও পরে লাশটি পারভেজের বলে শনাক্ত হয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। ১৪ দিন টানা তদন্তে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্নভাবে নিশ্চিত হয় এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার বন্ধুরাই। বৃহস্পতিবার ভাঙ্গা থানার এসআই আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে শিবচরের সন্ন্যাসীরচর থেকে গ্রেফতার করা হয় হৃদয় মাদবর ও আজিজুল মুন্সীকে।

এই দুজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে হত্যার মোটিভ। হৃদয় ও আজিজুল মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। ১৩ অক্টোবর গান শোনার কথা বলে এ দুজন পারভেজকে ভাঙ্গায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে কোল্ড ড্রিংকসের সাথে নেশাদ্রব্য মিশেয়ে খাওয়ানো হয়। পরে পারভেজকে ভাঙ্গার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার আড়িয়াল খা নদের তীরবর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

নিহত পারভেজের স্ত্রী রোজিনা আক্তার বলেন, ১৩ তারিখ ভ্যান নিয়ে আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ১৪ তারিখ ভাঙ্গা থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের কঠোর বিচার চাই।

ভাঙ্গা থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন, লাশটি পাওয়ার পর আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করি। প্রথমেই খোয়া যাওয়া ভ্যানটি উদ্ধার করি। পরে হত্যাকারী দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। মূলত নেশার জন্য ভ্যান বিক্রির টাকা লুটের জন্যই তারা পারভেজকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে। ভ্যান বিক্রির ওই টাকা এক রাতেই তারা নেশা করে ও জুয়া খেলে উড়িয়ে ফেলেছে।