তালিকায় নাম না থাকায় স্ট্রোকে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় নওগাঁর ধামইরহাটে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সাহাপুর গ্রামে তিনি মারা যান।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ গ্রাম উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের নেউটা গোপাইডাঙ্গা গ্রামে তার মরদেহে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়।

মৃত্যুকালে সাহার আলী (৮০) স্ত্রী, ৫ মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তার গেজেট নম্বর-৩০৩৪।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণপতি রায়, ধামইরহাট থানার এসআই নুরুল ইসলাম, এএসআই আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফরমুদ হোসেন প্রমূখ।

মৃতের ছেলে দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু জামুকা কর্তৃক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে আমার বোনের বাড়ি উপজেলা সাহাপুর গ্রামে বেলা ১১টার দিকে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান।

উপজেলার যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরমুদ হোসেন জানান, সাহার উদ্দীন ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম এভাবে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি সে সহ্য করতে পারেননি। একজন মুক্তিযোদ্ধার ওপর এটি অবিচার বলে মনে করি।

ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব গনপতি রায় বলেন, যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে এ মৃত্যুর কোন যোগসূত্র নেই। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। অসুস্থ্যর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া এটা প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চূরান্ত তালিকা প্রকাশের পর
যারা প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তাদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাকে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়।

তিনি যেহেতু মুক্তিযোদ্ধা নন তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হলো কেন?- এমন প্রশ্ন করলে ইউএনও এড়িয়ে যান।

জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ধামইরহাট উপজেলার ৮৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়। প্রতিবেদন ফরমে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর চলতি মাসের ২২ তারিখে দেখানো হলেও তা প্রকাশ করা হয় বৃহস্পতিবার। এতে ৫৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম বাতিল করা হয়।

বাতিল তালিকায় নাম থাকায় কথা শুনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলী (৮০) স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।