স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও শহীদ গেজেটে নাম অন্তুর্ভুক্ত হয়নি খুলনার দুই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনাঃ মুক্তিযুদ্ধের ৪৯ বছরেও শহীদ গেজেট নাম অন্তুর্ভুক্ত হয়নি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী খুলনার দুই বীর মুক্তিযোদ্ধার। এরা হলেন আবদুল আজিজ মোল্লা এবং মনোরঞ্জন মজুমদার। এই দুই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলায়। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্মৃতিফলকে তাদের নাম স্থাপন করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু শহীদ গেজেটে নাম না থাকায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে শহীদ এই দুই মুক্তিযোদ্ধা তথ্য হারিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন তাদের সহযোদ্ধারা।

এ অবস্থায় এই মুক্তিযোদ্ধার নাম শহীদ গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মোঃ আবু জাফর। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং সহযোদ্ধাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর বটিয়াঘাটা উপডজেলার বারো আড়িয়া বাজার রাজাকার ঘাটি দখল যুদ্ধে শহীদ হন আবদুল আজিজ মোল্লা। তিনি পাইকগাছা উপজেলার মৌখালী গ্রামের নওয়াব আলী মোল্লার ছেলে। যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পর তার সহযোদ্ধারা তার নিজ গ্রাম মৌখালী দাফন করেন। মুক্তিযুদ্ধের অনেক পর সহযোদ্ধাদের তৎপরতায় পাইকগাছায় তার কবরটি পাকা করে নাম ফলক দেওয়া হয়। এছাড়া বেসামরিক গেজেটেও (নং-১০২৮) তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু শহীদ গেজেটে তার নাম নেই।

মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন মজুমদার ১৯৭১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা যুদ্ধে শহীদ হন। ওই যুদ্ধের কমান্ডার স ম বাবর আলীর নির্দেশে সহযোদ্ধারা তাকে গোয়ালডাঙ্গা গ্রামে সমাধিস্ত করেন। ২০০৫ সালের ২১ মে বেসামরিক গেজেট-১০৭০ তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু শহীদ গেজেটে তার নাম নেই।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের খুলনার সাবেক জেলা কমান্ডার মোঃ আবু জাফর যায়যায়দিকে বলেন, খুলনার বিভিন্ন যুদ্ধে এই দুই মুক্তিযোদ্ধা বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তারা অবিবাহিত ছিলেন। তাদের বাবা-মা অনেক আগেই মারা গেছেন। তাদের পক্ষে এগুলো নিচে কথা বলার কেউ নেই, তাদের ভাতা নেওয়ারও লোক নেই। সেই জন্য শহীদ গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আমি আবেদন করেছি।

তিনি বলেন, আরও কয়েক দশক পর কোনো মুক্তিযোদ্ধা জীবিত থাকবেন না। গেজেটে নাম না থাকলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধে তাদের শহীদ হওয়ার তথ্য জানতেও পারবে না। মনের তাগিদে তাদের নাম অন্তভুক্ত করার দাবি জানাই। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের নাম থাকলে বর্তমান নতুন প্রজন্ম আর ও ইতিহাস জানতে পারবে বলে এলাকা সাধারন মানুষ মনে করেন।