চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭টি ইউনিয়নের প্রবেশ দ্বার ধাপাপাড়া সড়ক এখন মরণফাঁদ

প্রকাশিত: ১১:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২০

ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধি ; চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ দ্বার ২য় মহানন্দা শেখ হাসিনা সেতুর শহর প্রান্তের পৌর এলাকার ধাপাপাড়া হয়ে বটতলাহাট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। চৌমুহনী থেকে ধাপাপাড়া পর্যন্ত একেবারে রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা, তাই যেনো মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে।

একটু বৃষ্টি হলেই খানাখন্দগুলো ভরে যায়। বেহাল এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গাড়িচালক ও যাত্রীরা। রাস্তায় খানা-খন্দক থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও লোকজনদের চলাচল করতে হচ্ছে। আবার অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাস্তাটির অধিকাংশ অংশজুড়েই ছোট-বড় খাদ সৃষ্টি হয়েছে।

দীর্ঘদিন স্থায়ী সংস্কার কাজ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে সব যানবাহন। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তগুলো বড় হওয়ায় এবং পাশের বাড়ির ড্রেনের পানিতে পিচ ঢালাই উঠে যাওয়ায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে ভারী যানবাহন দেবে ও বিকল হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলার সদর উপজেলার পদ্মা-মহানন্দা পাড়ের দিয়াড় এলাকার, দেবিনগর, ইসলামপুর, সুন্দরপুর, পাঁকা, চরবাগডাঙ্গা ও শাহজাহানপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের একমাত্র চলাচলের পথ এইটি। ভারী যানবহন চলাচল না করলেও অটোরিক্সাসহ হালকা শত শত যানবাহন চলাচল করছে প্রতিনিয়ত।

এই সকল প্রত্যন্ত এলাকার শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। এ রাস্তাটি বছরের পর বছর ধরেই এমন বেহাল অবস্থায় থাকলেও এটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন সময় এই রাস্তা সংস্কারের কথা বললেও তা বাস্তবের মুখ দেখেনি এখনও। বিশিষ্ট মুদি ব্যবসায়ী, ধাপাপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম জানান, এ সড়কে স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করা যায় না। বৃষ্টি হলে কোমর পানি হয়ে যায়, ছোট নদী পাড়ের মতো কাচা মেরে পার হতে হয়। সুস্থ শরীর নিয়ে যানবাহনে উঠে অসুস্থ শরীর নিয়ে নামতে হয়। ভাঙা রাস্তার কারণেই এ সড়কে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা।

হরিপুর গ্রামের গরিব ভ্যান চালক রবিউল বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ সড়কের বেহাল অবস্থা। আমাদের গাড়িগুলো গর্তে পড়ে ঘন-ঘন বিকল হয়ে যাচ্ছে। টায়ার টিউব ৬ মাস চলে না, বিয়ারিং ভাঙ্গতেই থাকে। ধীরগতিতে চলার কারণে সময় নষ্ট হচ্ছে, যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছেন।
ধাপাপাড়া মোড়ে পূজা জুয়েলার্সের মালিক সিপত কুমার সহ কয়েকজন দোকান মালিক বলেন, আমার দোকানের সামনেই রাস্তা খানাখন্দে ভরা আর হাটুজল পানি। তাই আমার দোকানে কাদাপানি ভেঙ্গে কোনো কাস্টমার আসতে চাইছেনা। একেতো করোনায় ব্যবসা মন্দা তারপর দোকানের সামনে বেহাল এ অবস্থা। যেনো মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ।

স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর মমরেজ আলি বলেন, আমি খুব অসুস্থ হয়ে বাসায় আছি অতএব বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারছিনা।

পৌর মেয়র অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ধাপাপাড়া রাস্তার পাশের ড্রেনের কাজ চলছে। এবং রাস্তার কাজ এলজিইডি আওতাধীন টেন্ডার হয়েছে, বৃষ্টির কারনে কাজ শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

সরজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ২য় মহানন্দা শেখ হাসিনা সেতু ৭ টি ইউনিয়নের শত শত গ্রামের একমাত্র ব্যস্ততম সড়কটি বছরের পর বছর ধরে সংস্কার হয়নি। মাঝে মধ্যে কোথাও কোথাও ভ্যান চালকরা সংস্কার করলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে আবারো পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে সড়কের চেহারা। আর এতে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগের কবলে পড়ছে যানবাহনের যাত্রীরা।