ভোলায় পৃথক স্থানে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ১০:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক ; ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার দুলারহাট থানাধীন আহাম্মদপুর ইউনিয়নে পৃথক স্থানে সামিয়া (২২) ও লিমা (২১) নামের দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার উপজেলার আহাম্মদপুর ৫নং ওয়ার্ড স্বামীর বসত ঘর ও ৬নং ওয়ার্ড বাবার বাড়ী থেকে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহত সামিয়ার পরিবারের দাবী তাকে হত্যা করেছে স্বামী।

নিহত সামিয়া উপজেলার দুলারহাট থানাধীন আহাম্মদপুর ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড নুর স্ত্রী ও নুরাবদ ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের মেয়ে অপরদিকে নিহত লিমা আহাম্মদপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে ও নুরাবাদ ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের রিয়াজের স্ত্রী।দুলারহাট থানার উপ-পরিদর্শক আতিক জানান, আহাম্মদপুর ইউনিয়নের দফাদার জসিমের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূ সামিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে গৃহবধূ সামিয়ার স্বামীসহ তার শশুর বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে।

সামিয়ার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, তারা ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সামিয়া সবার ছোট। আহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরমোহাম্মদের সাথে প্রায় দুই বছর পূর্বে বিয়ে হয়। সামিয়ার স্বামী নুর মোহাম্মদ বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন মেয়ের সাথে কথা বলে এবং নেশা করে। সামিয়া তার স্বামীকে মেয়েদের সাথে কথা বলতে ও নেশা করতে বাধা দিলে তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে।

ঘটনার প্রায় ১০দিন আগে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে সামিয়া তার বাবার বাড়ীতে চলে আসে। চলে আসার একদিন পর সামিয়ার স্বামীর পরিবারের লোকজন স্থানীয়ভাবে শালিসীতে বসে পুনরায় স্বামীর বাড়ীতে সামিয়াকে নিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার দিন সকাল ৯টার দিকে সামিয়ার বড় ভাই আনোয়ারের কাছে সামিয়ার শশুর বাড়ীতে থেকেএকটি ফোন আসে, সামিয়া অসুস্থ তাকে হাসপাতালে নিতে হবে আপনারা কেউ আসেন।

খবর পেয়ে সামিয়ার বড় ভাই আনোয়ার সামিয়ার শশুর বাড়ীতে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে তার স্বামীর বসত ঘরে খাটের ওপর সামিয়ার মরদেহ পড়ে আছে। তবে ঘরে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন নেই। পরে পুলিশ খবর ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

বোন সামিয়াকে তার শশুর বাড়ীতে নিয়ে তার স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবী করেন বড় ভাই আনোয়ার হোসেন।

অপরদিকে পুলিশ ও পরিবার থেকে জানা যায়, ঈদে নতুন কাপড় না পেয়ে গালায় ফাঁস দিয়েছেন গৃহবধু চরফ্যাসনের দুলারহাটে ঈদে নতুন কাপড় না পেয়ে স্বামীর সাথে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন লিমা বেগম নামের এক গৃহবধু।

বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় দুলারহাট থানার আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের গৃহবধুর বাবার বাড়িতে এঘটনা ঘটে। নিহত লিমা বেগম ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী।

পুলিশ ও পরিবার জানাযায়, এক বছর আগে দুলারহাট থানার আহম্মদপুর ইউনিয়নের আবদুল মোনাফের ছেলে রিয়াজ উদ্দিনের সাথে তার বিয়ে হয়। স্বামী ঢাকায় কর্মস্থলে থাকায় ঈদে নতুন কাপড় কেনা নিয়ে গত সোমবার মোবাইল ফোনে স্বামীর সাথে তার হয়।

পরে তিনি শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলেন যান। মঙ্গলবার স্বামী রিয়াজ বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুর বাড়িতে যান। কিন্তু অভিমানী স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে আসেননি। ফের ঈদের দিন ওই নতুন কাপড় কেনা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মোবাইল ফোনে তর্কবিতর্ক হয়। ওই তর্কের জের ধরে অভিমানী স্ত্রী স্বামীর সাথে অভিমান করে বাবার বাড়ি শয়নকক্ষের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

দুলারহাট থানার ওসি তদন্ত মো আলাউদ্দিন জানান,নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর মুল রহস্য জানা যাবে।