সেতু ভেঙে খালে, অল্পের জন্য রক্ষা পেল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার তালতলীতে ২০০ ফুটের একটি সেতুতে শিক্ষার্থীরা চলাচল অবস্থায় ভেঙে খালে পড়ে গেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পায় ৫-৬ জন শিক্ষার্থী। সেতুটি ভেঙে যাওয়াতে দুর্ভোগে পড়েন শতাধিক শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষ।

দ্রুত বিকল্প সেতু নির্মাণ না করলে বন্ধ হবে দুইটি স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া। স্থনীয়রা নতুন সেতু নির্মানের জোর দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ২০০৩-২০০৪ অর্থ বছরে স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগ উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ও বড়বগী ইউনিয়নের ঝাড়াখালী-বড়ভাইজোড়া সংযোগ সেতুটি নির্মাণ করে।

দীর্ঘ দিনেও সেতুটি সংস্কার না করায় লোহার এঙ্গেল গুলো নোনা পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। এতে রোববার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে ব্রিজটি ভেঙে যায়। চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছেন দুটি বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচলের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। জোয়ারের পানিতে সেতুটি তলিয়ে থাকায় পারাপার করে যারা বিদ্যালয়ে আসত ওই সব শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে আছেন বড় ভাইজোড়া ও নিউপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা।

সোমবার দুপুর ১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি ধসে খালের পানির মধ্যে পড়ে আছে। আর সেতুর দুই পাড়ে শিক্ষার্থীরা ও শিশুদের টিকা নেওয়ার জন্য পারাপারে জন্য দাঁড়িয়ে আছে এলাকাবাসী। কিন্ত পারাপারের কোন বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই আসেন নারী ও শিক্ষার্থীরা।

জান্নাতি, জাহিদুল, রাহাত ও সাইদুলসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল স্কুলে আসার সময় আমরা সেতুটি পার হচ্ছি। হঠাৎ বিকট শব্দ পাই দ্রুতই সেতু থেকে দৌড়ে এক পাড়ে যাই। তবে আমাদের কিছু সহপাঠি অন্য পাড়ে দৌড়ে যায়। এরপরেই চোখের সামনেই সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। একটুর জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি করছি। না হলে আমাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এমনিতেই করোনার কারণে আমরা পিছিয়ে রয়েছি।

ঝাড়াখালীর এলাকার বাচ্চু নামের এক অভিভাবক জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুই পাড়ের ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারছে না। এতে তাদের লেখা পড়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি করেন। এছাড়াও সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় দুই গ্রামের মধ্যে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমাদের জরুরি প্রয়োজনের কোন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।

দক্ষিণ ঝাড়াখালি এস ই এস ডি পি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সেতুটি খালের পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। কিন্তু খালের ঐ পারে গ্রামের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে এখানে দুইটি বিদ্যালয়ের। সেতুটি ভেঙে পড়ায় শতাধিক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের যাতায়াতে যে কী কষ্ট হয় তা বোঝাতে পারব না।

কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মোল্লা বলেন, গতকাল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আসার সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এই এলাকার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এই সেতুটি তাই। দ্রুত সেতুটি মেরামত করা দরকার।

উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, সেতুটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও লোনা পানিতে সেতুটির লোহার এঙ্গেল গুলো নষ্ট হওয়াতে ভেঙে গেছে। নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।