ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় র‌্যাবের হাতে ৫ জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় ৫ রেল ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪। শনিবার দিবাগত রাতে তাদের ময়মনসিংহ নগরীর বাঘমারা ও শিকারাীকান্দা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন- আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮) মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১), মোহাম্মদ (২৫)। তারা ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা।

র‌্যাব সূত্র জানায়, এ লোমহর্ষক ঘটনার পরপরই ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পারিপাশ্বির্কতা বিচার ও নিহতের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ডাকাতদলের সন্ধান পেয়ে যায় র‌্যাব। মধ্যরাতে সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে (২৬) ময়মনসিংহের শিকারীকান্দা এলাকা থেকে বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল ফোন উদ্বার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চেইন অপারেশনের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১), মোহাম্মদকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেখানো জায়গা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ৪ জন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠে। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন টঙ্গী স্টেশন থেকে তাদের সাথে যুক্ত হয়। ট্রেনটি ফাতেমা নগর স্টেশনে থামলে তাদের সাথে যোগ দেয় মোহাম্মদসহ আরেক সহযোগী ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে তারা ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা লুট করা শুরু করে। ডাকাতির একপর্যায়ে মো. সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমদের মাথায় এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে। সাগর ও নাহিদ আঘাতে লুঠিয়ে পড়লে ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে প্রবেশের পূর্বে সিগন্যালের কাছে নেমে যায়।

র‌্যাব জানায়, তারা একটি সংঘবব্দ চক্র। এ চক্রটি নিয়মিতভাবে ডাকাতি করে আসছে। তারা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেল স্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ট্রেনে ওঠে। তাদের সহযোগি গফরগাঁও-ফাতেমা নগর স্টেশন হতে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ট্রেনে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যায়। ঘটনার দিন তারা ছিনতাইয়ের পরিবর্তে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। তারা ছোট ছোট গ্রুপে উপ-গ্রুপে ভাগ হয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করতো। এ গ্রুপগুলোর কেউ টার্গেট শনাক্ত করতো, কেউ নিরাপত্তা দেখতো, কেউ লুট করা মালামাল বিক্রি করতো। রিশাদ এ চক্রের মূল হোতা। তার নামে আগে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় মামলা ছিল। রিশাদ বর্তমানে জামিনে আছে।

র‌্যাব-১৪-এর উইং কমান্ডার রুকুনুজ্জামান বলেন, ‘এ চক্রটি প্রায়ই ট্রেনে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাতো। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’