টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ভিক্ষুক হত্যা

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক হত্যার চারদিন পর পাবনার ঈশ্বরদীতে মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে ঈশ্বরদী থানায় আয়োজিত এক প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ সুপার এসব তথ্য জানান।

গত ২৪ জুন গভীর রাতে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর রহিমপুর গ্রামে জাহিদুল ইসলাম প্রামাণিকের বাড়ির শয়ন কক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক মিলন হোসেন ওরফে চাপার (৩০) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। খুনের ঘটনার সন্দেহে পুলিশ সে সময় আওতাপাড়া থেকে জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ছামেলা খাতুনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, নিহত যুবকের প্রকৃত নাম মিলন হোসেন। তিনি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা গ্রামের আবু বক্কার মাতব্বরের ছেলে। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারতেন না। চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা থানার দর্শনায় ভূমিহীন পাড়ায় তাঁর শ্বশুর বাড়িতে থেকে তিনি ভিক্ষা করতেন। পুলিশ এই হত্যার রহস্য তদন্তের জন্য ঈশ্বরদীর শাকিল হোসেন ও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া গ্রাম থেকে জাহিদুল প্রামাণিক ও নিরঞ্জন দাসকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রায় ছয় বছর পূর্বে মিলনের সঙ্গে জাহিদুলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে জাহিদুল ও মিলন একসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা এলাকায় ভিক্ষা করত। পরবর্তীতে তাঁরা পাবনার চাটমোহর রেলবাজার এলাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে ভিক্ষা শুরু করে। দুই মাস ভিক্ষা পর মিলন ও জাহিদুলের মধ্যে ভিক্ষার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে চরম বিরোধ বাধে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াও হয়। এই ঘটনার পর জাহিদুল, তার স্ত্রী ছামেলা খাতুন, ছেলে শাকিল ও সহযোগী নিরঞ্জন মিলে প্রতিবন্ধী মিলনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ জুন দিবাগত রাত একটায় প্রতিবন্ধী মিলনকে তারা বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ ও ব্লেড দিয়ে শরীর কেটে তাকে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি শয়ন কক্ষে লাশ লুকিয়ে রাখে। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর খুনের ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেফতার চারজনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত রোববার পাবনা আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

প্রেস বিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলাম প্রমুখ।