শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ১৪ আসামিকে ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে ১৪ জনের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ বা গুলি করে কার্যকর করতে বলা হয়েছে ।

মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ -এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিচারক বলেন, ‘দণ্ডবিধিরর ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় অপরাধের জন্য আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। একটি ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ হইল। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোনো অসুবিধার কারণ থাকলে প্রচলিত নিয়ামানুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের প্রত্যেকরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হলো। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় চরম দণ্ড প্রদান করায় দণ্ডবিধির ১২১ ক/২২২/১২৪ “ক” ধারা মতে কোনো দণ্ড প্রদান করা হলো না।’

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমেই এ ধরনের নৃশংস ও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মো. লোকমান, মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মো. আনিসুল ইসলাম ও সারোয়ার হোসেন মিয়া। আসামিদের মধ্যে মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান জামিনে রয়েছেন।

এর আগে গত ১১ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন ওই স্থানেই শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।

২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন সিআইডির এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চলার বিভিন্ন সময়ে আদালত মোট ৫০ সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। কিন্তু অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলার রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান, তারেক হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, সারোয়ার হোসেন মোল্লা, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও আনিসুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ শেখ মো. এনামুল হক, মোছাহেব হাসান।