পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২০

নিউজ ডেস্ক :নওগাঁয় হাড়িয়াগাছি গ্রামে পরকীয়া সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন ছকু (৩৬) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৮ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহত ওই যুবক উপজেলার হাড়িয়াগাছি গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে। তার দুই সন্তান রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাতে পিটুনির শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় নিহতের ভাই উজ্জ্বল হোসেন বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জল হোসেন ছকুর গ্রামে হাড়িয়াগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরি করেন। তার সঙ্গে একই গ্রামের দিলদার হোসেনের স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে দিলদার ও তার পরিবারের লোকজন সন্দেহ করতেন। সন্দেহেরবশে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তোফাজ্জলকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যান গৃহবধূর স্বামী দিলদার হোসেন ও তার লোকজন। এরপর তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় দিলদার হোসেন, সোহেল রানা, পরাগ, আরিফ ও সেলিনা বেগমসহ কয়েকজন লাঠিসোটা দিয়ে মারপিট করেন। পরে তারা তোফাজ্জলের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে নওগাঁ সদর থানা পুলিশকে খবর দেন।

পুলিশ এসে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে গ্রহণ না করে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়। পরে তোফাজ্জলকে তার পরিবারের লোকজনের কাছে চিকিৎসার জন্য হস্তান্তর করে পুলিশ ফিরে যায়।

পরে তোফাজ্জলের পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরদিন বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাত ১২টার দিকে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তোফাজ্জল মারা যাওয়ার পর থেকে দিলদার হোসেনের পরিবারের লোকজনসহ অন্যরা পলাতক রয়েছেন। তাদের বাড়িঘর এখন তালাবদ্ধ রয়েছে।

নিহত তোফাজ্জলের চাচাতো ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তোফাজ্জল সন্ধ্যায় দিলদারের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই গৃহবধূর স্বামী দিলদার ও তার লোকজন তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে মারপিট করেন। মারপিটের এক পর্যায়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক জেনে তারা তোফাজ্জলের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ প্রচার করেন ‘

তিনি বলেন, পরকীয়ার সন্দেহের জেরেই তোফাজ্জলকে হত্যা করা হয়েছে। চুরির যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এ বিষয়ে নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘কোন অসামাজিক কার্যক্রম থাকলে সে ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া অপরাধ। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের তৎপরতা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।