রায়ে সন্তুষ্ট রিফাতের বাবা

প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ।বুধবার দুপুরে এ মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ৪ জন।

রায় ঘোষণার পর রিফাতের বাবা বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সবাই এ রায়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। সংশ্লিষ্ট সবাই এ মামলার বিচার কাজ আন্তরিক ভাবে করেছেন। সে জন্য আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছ ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুইপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।

চলতি বছরের ০১ জানুয়ারী বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।

তারা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২), আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল ইসলাম সাইমুন (২১)।

অভিযোগ গঠন উপলক্ষে এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এছাড়া বাবার সঙ্গে আদালতে হাজির হন এ মামলায় জামিনে থাকা নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। আসামি মো. মুসা পলাতক।

পরে আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। অভিযোগ গঠন শেষে কারাগারে থাকা ৮ আসামিকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়।

এদের মধ্যে প্রথম থেকে ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ৮ এবং ১০ নম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ২১২ এবং ১২০ বি ১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়ছে।

এ মামলার প্রাপ্ত বয়স্ক ৯ নম্বর আসামির বিরুদ্ধে আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, ধারালো দা দিয়ে রিফাতকে একের পর এক কোপ দিতে থাকেন দুই যুবক। ওই সময় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই যুবককে বার বার প্রতিহতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঘটনাটি পুলিশের সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেও স্বামীকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন মিন্নি। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেয়ার পর মারা যান রিফাত।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদি হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল। এরপর আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে ১৬ জুলাই রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের তদন্তে স্বামী হত্যায় ফেঁসে যান মিন্নি। পর দিন তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। দুই দিন পর মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।