পঞ্চগড়ে সারের বাফার গুদামের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

প্রকাশিত: ৩:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : পঞ্চগড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সারের বাফার গুদামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বৃহস্পতিবার।বোদা উপজেলার আরাজি গাইঘাটা নামক স্থানে নির্মিত এই গোডাউনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় গত ৩০ অক্টোবর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান ও বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকদের মাঝে ইউরিয়া সার সরবরাহ ও নিরাপদ মজুদ নিশ্চিতকরণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআিইসি) এই গুদামটি নির্মাণ করে। প্রায় ৪ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই গুদামটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৭ কোটি ৪৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সারের বাফার গুদামটি নির্মাণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। তাই কৃষক বান্ধব বর্তমান সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষি উপকরণ কৃষকদের নিকট সহজলভ্য করেছে। কৃষি উৎপাদনে ইউরিয়া সার অন্যতম প্রধান উপকরণ। দেশে বছরে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদন, আমদানি ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআিইসি)। দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ২৫টি বাফার গুদাম থেকে ডিলারদের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকদের মাঝে ইউরিয়া সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

বিসিআইসির চেয়ারম্যান জানান, নিরাপদ মজুদ নিশ্চিতকরণে ২৫ লক্ষ মে. টন ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত হিসেবে আরও ৫ লক্ষ মে. টন সার মজুদ রাখা প্রয়োজন হয়। বর্তমানে কারখানা ও সকল বাফার গোডাউনের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ মে. টন। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় “সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ” প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি গুদামের ধারণ ক্ষমতা ১০ হাজার মে. টন হিসেবে এই প্রকল্পের আওতায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ সমাপ্ত হলে এক লক্ষ ৩০ হাজার) মে. টন সার মজুদ করা যাবে।

তিনি জানান, এ প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৬শ কোটি ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ করছে সেনা কল্যাণ সংস্থা।

এই প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শেরপুর, যশোর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজবাড়ী, পাবনা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও সুনামগঞ্জ জেলায় ১০ হাজার মে. টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মিত হচ্ছে। পঞ্চগড় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোডাউন নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্মাণ কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও বর্তমানে এই প্রকল্পের বাকি ১১টি গোডাউনের নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেরপুর, গাইবান্ধা, যশোর ও ২০২১ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে নীলফামারী; মার্চের মধ্যে নেত্রকোণা, পাবনা, কিশোরগঞ্জ; মে-র মধ্যে বরিশাল, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও জুনের মধ্যে সুনামগঞ্জে গোডাউনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ইউরিয়া সারের মজুদ ও সংরক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিসিআইসি কর্তৃক দেশে আরও ৩৪টি গুদাম নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৫ লক্ষ ১০ হাজার মে. টন। এ প্রকল্প সমাপ্ত হলে আশা করা যায় দেশে সার সংরক্ষণের সমস্যা থাকবে না।