সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৫ স’মিল ব্যবহার অযোগ্য করেছে ভ্রাম্যমান আদালত

প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : কাঠ কোথা থেকে নিয়ে এসেছেন? জানি না স্যার, মালিক ট্রাক দিয়া কাঠ আনেন। কোথা থেকে নিয়ে আসে বলতে পারলাম না। কাঠ দেখে তো মনে হচ্ছে বন থেকে এসেছে। হ স্যার, বন থেইকাও আসে আবার মাইনষে (মানুষে) বেইচা (বিক্রি) দেয়। কাঠের স্টক রেজিস্টার আছে? মানে কতটুকু কাঠ আসলো, চেরাই হলো পরে বিক্রি হলো? এইডা মালিক জানে, আমরা শুধু কাঠ চিরাই কইরা মালিক যেহানে দিতে কয়, দিয়া দেই। কতদিন যাবত এই কাজ করেন? দুই সপ্তাহ ধইরা কাম করতাছি। আমরা স্যার গরীব মানুষ, যেইহানে যে কাম পাই, করি আর পেট চালাই। বিজ্ঞ ভ্রাম্যমান আদালতের প্রশ্নের এমন উত্তর দেন জানালেন অবৈধ স’মিলে কর্মরত একজন শ্রমিক জাহিদ মিয়া (ছদ্দ নাম)।

বেশ কয়েকদিন যাবত সন্তোষপুরে সংরক্ষিত বনের আশে পাশে কিছু অবৈধ স’মিলে কাঠ কাটার হিড়িক পড়ে যায়। অনেক স’মিলের শ্রমিকই জানেন না কাঠের উৎস কোথায়, জীবিকার খোঁজে এসব মানুষ বৈধ-অবৈধের বোধ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু যে ধনাঢ্য মালিকগণ এসব অবৈধ স’মিলের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন, তাদের খুব কম ক্ষেত্রেই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়। অথচ বন ধ্বংস করতে বনের আশেপাশেই গড়ে উঠেছে ৩৩ টিরও অধিক অবৈধ স’মিল

পরিবেশ ও বন রক্ষার তাগিদ থেকেই সোমবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাও ইউনিয়নের কেশরগঞ্জ, সন্তোষপুর ও বালুঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫টি অবৈধ স’মিলের যন্ত্রপাতি, কাঠ আটকসহ ৫টি স’মিল ব্যবহারের অযোগ্য করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাহিদুল করিম। সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিনা আক্তার ও বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার সুমন মিয়াসহ বন বিভাগ ও আনসারদের চৌকষ টিম।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাহিদুল করিম জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৫টি অবৈধ স’মিল পূনরায় চালানোর অনুপযোগী করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় স’মিলগুলোর মালামাল জব্দসহ ৮ লাখ টাকার কাঠ জব্দ করা হয়। বন ও পরিবেশ রক্ষায় এ অভিযান ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।