পঙ্গু ভাতার কথা বলে ভিক্ষুকের ২০ শতাংশ জমি লিখে নিলেন প্রতারক চক্র

প্রকাশিত: ১২:২০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২২

জোটন চন্দ্র ঘোষ,হালুয়াঘাট : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পঙ্গু ভাতার কথা বলে এক বৃদ্ধা ভিক্ষুকের ২০ শতাংশ জমি লিখে নিলেন কৈচাপুর ইউনিয়নের নৈয়ারিকুড়া ও যাদুকুড়া গ্রামের একটি প্রতারক চক্র।

প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন, কৈচাপুর ইউনিয়নের নৈয়ারিকুড়া গ্রামের প্রধান প্রতারক সাবেক ইউপি সদস্য মৃত আব্দুল মতিন এর পুত্র সাদরুল আলম, মৃত আলী হোসেনের পুত্র রফিকুল ইসলাম ও যাদুকুড়া গ্রামের আবু জাফর মোঃ আব্দুর রশিদ এর পুত্র দেলোয়ার হোসেন, সারোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন।
এ ঘটনায় বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুন প্রতারক চক্রের সদস্যদের নামে হালুয়াঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

জানা যায়, মনকান্দা গ্রামের মৃত মুসলেম উদ্দিনের স্ত্রী সাফিয়া খাতুন (৬৩) কে নৈয়ারিকুড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রতারক চক্রের প্রধান সাবেক ইউপি সদস্য সাদরুল আলম, রফিকুল ইসলাম ভিক্ষুক সাফিয়া খাতুনকে হালুয়াঘাট পৌরসভার মেয়র পঙ্গু ভাতা দিবেন বলে বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। পরে পাগল পাড়া সাদরুল আলমের নিজ বাসায় বৃদ্ধাকে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন অবস্থায় হালুয়াঘাট সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে আসেন। পরে দলিল লেখক জুবায়ের হোসেন জুয়েল যাদুকুড়া গ্রামের আবু জাফর মোঃ আব্দুর রশিদ এর পুত্র দেলোয়ার হোসেন, সারোয়ার হোসেন, ও আনোয়ার হোসেন এর নামে মনকান্দা মৌজার খতিয়ান নং ৩৪৩ দাগ নং ৩২৬, শ্রেণী নামা, ২০ শতাংশ জমির ৮০ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ৬৫৩৭ নং দলিল সম্পাদন করেন।

বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর দুই আনা ওয়ারিশ সূত্রে আমার এই জমিটি প্রাপ্ত ছিল। রফিকুল ইসলাম পসর আমাকে সাদরুল আলমের নিজ বাসায় নিয়ে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন অবস্থায় হালুয়াঘাট সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে যায়। পরে আমাকে হালুয়াঘাট পৌরসভার মেয়র পঙ্গু ভাতা দিবেন বলে আমার হাতে ৫ হাজার টাকা দিয়ে পঙ্গু ভাতার ষ্ট্যাম্পে সই করতে বলেন। পরে সাব-রেজিষ্টার আমাকে বলেন জমি বিক্রির টাকা পেয়েছেন, আমি বলি আমাকে পঙ্গু ভাতার টাকা দিবেন ,আমি জমি বিক্রি করব কেন? তারপর শুনি আমার জমি প্রতারকের দল লিখে নিয়েছে। আমি নকল তুলে থানায় জমা দিয়েছি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

এ বিষয়ে প্রতারক চক্রের প্রধান সাবেক ইউপি সদস্য সাদরুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, এই বিষয় নিয়ে সালিশ দরবারের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার চেষ্টা হচ্ছে। আপনারা ডিষ্টাপ করেইন না।

এ বিষয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য দলিল গ্রহীতা দেলোয়ার হোসেন, সারোয়ার হোসেন গং জানান, আমরা সাদরুল ও পসড়কে টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেছি। এখানে আমরা নিরপরাধ বলে চলে যান।

এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুজ্জামান খাঁন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।