ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যার ৩ দিন পর বাংলাদেশি যুবকের লাশ হস্তান্তর

প্রকাশিত: ৮:৫৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যার তিন দিন পর এক বাংলাদেশি যুবকের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ।

সোমবার রাত ১১টার দিকে আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমানের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন।

নিহত ডালিম মিয়া কসবা উপজেলা সীমান্তবর্তী মাদলা গ্রামের মোহন মিয়া (৫০) ছেলে।

এদিকে, জহিরুল ইসলাম (৩০) নামে একই এলাকার বাসিন্দা গুরুতর আহত অবস্থায় আগরতলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

জানা গেছে, ডালিম মিয়া, কসবা উপজেলার মাদলা গ্রামের জহিরুল (৩০), একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৩০) ও কসবার কোল্লাপাথর গ্রামের হৃদয় মিয়া (২৬) সহ কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে গত শুক্রবার (১০ জুন) রাতে কসবা সীমান্তপথে অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে।

আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে (শূন্য রেখায়) রাজ্যের টাকারজলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানাধীন গোলাঘাটী গ্রামের একটি বিদ্যালয় থেকে শনিবার সকালে এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। এ সময় সেখানকার ভারতীয় অধিবাসীরা তাদের চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে ডালিমকে ধরে ফেলে এবং ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে অপর এক বাংলাদেশি যুবক গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে জহিরুলকে জনরোষের কবল থেকে টাকারজলা থানা পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

নিহত ডালিম মিয়ার বাবা মোহন মিয়া বলেন, মাদলা গ্রামের হাবিবুর রহমান শিমুল (৩৫) কয়েক দিন আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলের ভাই জহিরুলসহ অন্যরা ডালিমকে ভারতে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিমুলের স্ত্রীর সঙ্গে ডালিমের পরকীয়া চলছিল। পারিবারিক ভাবে বিষয়টি সম্প্রতি আপোষ মীমাংসা হলেও পরকীয়ার জের ধরেই শিমুল ও তার লোকজন ডালিমকে হত্যা করে।

অবশ্য আখাউড়া স্থলবন্দর চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডালিমকে কেন এবং কে বা কারা পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা জানাতে পারেনি বিএসএফ। ত্রিপুরা রাজ্যের পুলিশের কাছ থেকে আখাউড়া থানা পুলিশ সোমবার রাত ১১টার দিকে লাশ গ্রহণ করে।

আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, যেহেতু হত্যাকাণ্ড ভারতে ঘটেছে সুতরাং ভুক্তভোগী পরিবার এ বিষয়ে বিচার চাইলে ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন।

লাশ হস্তান্তরের সময় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফসহ ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।