আধাপাকা ধানের উপর রাখা হচ্ছে খাল খননের মাটি

প্রকাশিত: ১:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : জয়পুরহাটে খাল খনন করে মাটি দুই পাশের জমির আধাপাকা ধানের উপর রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্ষতি করলে ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ও পুরানাপৈল ইউনিয়নের ধারকী এবং হেলকুন্ডা মৌজার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া শত বছরের পুরনো একটি খালের (স্থানীয়ভাবে খাড়ি নামে পরিচিত) সংস্কার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সদর উপজেলার হেলকুন্ডা এলাকার সোয়া ৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন শুরু করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। খালের দুই পাশের জমির আধাপাকা ধান মাটি চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় হেলকুন্ডা, হানাইল, কাদিপুর মৌজার কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ধান কাটা থেকে মাড়াই পর্যন্ত খনন কাজ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে ও প্রতিকার চেয়ে সোমবার জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে অভিযোগ করেছেন্।

অভিযোগে বলা আছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা খাল পুনঃ খনন কাজের দায়িত্ব পান যশোরের মিশন পাড়ার পুরাতন কসবা মেসার্স নুর হোসেন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান্। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি হিসেবে খনন কাজ তদারকি করছেন নাটোরের মুক্তার হোসেন নামের এক ব্যাক্তি। কৃষকদের দাবী খালটির প্রস্থ মাত্র ১০ ফুট হলেও খালের দু’পাশের ৪৫ ফুট জমি দখল করে ধান ক্ষেত নষ্ট করে খনন কাজ করা হচ্ছে। খাল খননের মাটি রাখা হচ্ছে আধাপাকা ধানের উপর। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। অনেকেই কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। এক মাসের জন্য খাল খনন কাজ বন্ধ রাখাতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আবু মাসুম বলেন, অনেক টাকা খরচ করে বোরা ধান চাষ করেছি। জমির ধান আধাপাকা অবস্থায় কাটতে হচ্ছে।

হানাইল গ্রামের কৃষক মোশাররফ হেনের বলেন, আধাপাকা ধান কেটে খালের মাটি রাখার জায়গা করে দিতে হচ্ছে। তা না হলে, ধানের উপর মটি রাখা হচ্ছে।

সগুনা গোপীনাথপুর গ্রামের ফেরদৌস জানান, বোরো ধান ঘরে তোলার আশায় দিন গুণছি। সম্ভব হবে কিনা জানি না।

কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মুক্তার হোসেন জানান, আমরা কৃষকের জমিতে নয়, খাল খনন করছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশরী জাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের নীতিমালা মেনে হেলকুন্ডা খাল পুনঃখননের কাজ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, কৃষকের ধানের ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবে না। ক্ষতি করলে ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।