বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ, দুশ্চিন্তায় কৃষক দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২১ অনলাইন ডেস্ক : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকের দুই হেক্টর জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। একদিকে জমির ধান পুড়ে গেছে অন্যদিকে মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় হতাশায় ভুগছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বুধবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, প্রান্তিক চাষিরা এক বুক আশা নিয়ে চলতি মৌসুমে কোমড় বেঁধে তাদের পতিত জমিতে ধান চাষ করেছেন। শীর্ষ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন ভরে উঠেছে তাদের। কয়েকদিন গেলেই কৃষকরা জমির ধান কাটা শুরু করতেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ উপজেলার দুই হেক্টর ব্রী-২৮ ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ধানের শীষ বের হবার সঙ্গে সঙ্গে চিটা হয়ে শুকিয়ে সোনালী রঙ ধারণ করায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে শত শত কৃষকদের ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কোন কোন কৃষক আক্রান্ত জমির ধান গো-খাদ্যের জন্য কেটে নিচ্ছেন। উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তুপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেনের তিন বিঘা জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শীষগুলো শুকিয়ে মারা গেছে। শুধু আমজাদ হোসেনই নয়, ওই এলাকার হাসেম আলী, হানিফ উদ্দিন, করিম উদ্দিনসহ অধিকাংশ কৃষকের ধান এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অন্যদিকে, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালাতাড়ি গ্রামের কৃষক শংকর পালের এক বিঘা, পূর্বফুলমতি গ্রামের ইবরাহীম মিয়ার এক বিঘা, একই ইউনিয়নের কুরুষা ফেরুষা গ্রামের কৃষক কাসেম আলীর এক বিঘা, কপুর উদ্দিনের ২৫ শতক ও গোলজার হোসেনের এক বিঘা ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষকরা বোরো ধান চাষ করেছেন সাড়ে সাত হেক্টর, ব্রী-২৮ সহ বিভিন্ন জাতের নয় হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে। সময় মত বীজ, সার কৃষকের হাতের নাগালে থাকায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে এসব জমি থেকে ৬৬ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনাও রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ ক্ষেতের ধান গাছে শীর্ষ বেরিয়েছে। এই বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। অনন্তপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন তিনি। তার মধ্যে এক বিঘা ২৮ জাতের ধানের শীর্ষ শুকিয়ে গেছে। কিন্তু এ রোগ মোকাবিলায় তিনি কৃষি অফিসের আগাম কোন পরামর্শ পাননি। আক্রান্ত ক্ষেত রক্ষার্থে তিনি বাজার থেকে নাটিভো নামের ছত্রাকনাশক ঔষধ ক্রয় করে স্প্রে করলেও ধানের রোগ থেকে মুক্তি পাননি। বালাতাড়ি গ্রামের কৃষক শংকর পাল জানান, তিনি উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এ বছর মোট চার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এর মধ্যে এক বিঘা জমিতে ব্রী-ধান ২৮ এর শীর্ষ বের হয়ে সম্পূর্ণ ধান গাছ পুড়ে গেছে। অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। এখন তিনি কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন। সেই সঙ্গে তিনি কৃষি বিভাগের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ জানান, হঠাৎ করে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতের বেলায় ঠান্ডা পড়ায় এ ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ উপজেলার প্রায় দুই হেক্টর কৃষকের ২৮ জাতের ধান পুড়ে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকের আক্রান্ত ধান ক্ষেতে গিয়ে কৃষকদের মাঝে ধান রক্ষার্থে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আউশ ধান চাষের জন্য বীজ, সারসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা করা হবে। Share this:FacebookX Related posts: দিনাজপুরে লিচু গাছে প্রচুর মুকুল,মৌয়ালদের ভীড় বাড়ছে বাগানে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন পঞ্চগড়ের টমেটো চাষিরা কুড়িগ্রামে ভতুর্কি মূল্যে ১৩টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ বিরামপুরে কৃষককে কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন প্রদান পঞ্চগড়ে মরিচ ক্ষেতে মড়ক: সংকটে চাষিরা গাইবান্ধায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল ক্রয়ের উদ্বোধন ফুলবাড়ীতে শীলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি: পানিতে ডুবে গেছে ধান পঞ্চগড়ে মরিচের বাম্পার ফলন, আগাম বর্ষায় লোকসানের আশংকা পঞ্চগড়ে মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষকরা রাণীশংকৈলে সমলয় প্রযুক্তি-তে চাষাবাদের উদ্বোধন করলেন ডিসি সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত পঞ্চগড়ের সর্ষে ক্ষেত সূর্যমুখী ফুলের হাসিতে হাসছে পঞ্চগড় SHARES Matched Content কৃষি বিষয়: দুঃশ্চিন্তায় কৃষকবোরো ক্ষেতেব্লাস্ট রোগ