মাদক মামলায় জেল থেকে বের হয়েই সিনেমা স্টাইলে হামলা,দোকান ভাংচুর ও লুটপাট

প্রকাশিত: ৯:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২০

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে মাদক মামলায় জেল থেকে দুপুরে বেরিয়ে সন্ধ্যায় পূর্ব ঘোষণা দিয়ে একটি খাবার হোটেল ও মিষ্টান্ন ভান্ডারে ফিল্মি স্টাইলে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে স্থানীয় মাদক কারবারি কোমল ও তার বাহিনী। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার রাতোয়াল বাজারে জালালের খাবারের হোটেলে মারপিটের এই ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মাদক কারবারি একই গ্রামের কোমল ও তার ছেলে শাকিলের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দোকানের মালিক জালাল প্রামানিক (৩৫) কে লাঠি, রড ও হাসুয়া দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করে এবং দোকানের মালামাল ভাংচুর ও লুটপাট করে।

এসময় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে প্রায় ৮ হাজার টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। রাতোয়াল গ্রামের মৃত-হাবিবর প্রামানিকের ছেলে জালালকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। জালালের অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে বীর দর্পে ঘোরাফেরা করলেও এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক না হওয়ায় এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আহত জালাল জানান কোমলের মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কথা বললেই সে ও তার ছেলেসহ সাঙ্গ-পাঙ্গরা বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসতো। তারই ধারাবাহিকতায় ঘোষনা দিয়ে তারা আমাকে মারপিট করেছে। কোমল ও তার ছেলেসহ তাদের দলবল খুবই ভয়ংকর। তাদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বললেই এধরনের ঘটনা ঘটায়। আমি এদের দৃষ্টান্তরমূলক শাস্তি চাই।

কোমলের শ্বশুড় ইয়ারব জানান জালাল প্রথমে আমার নাতি শাকিলকে কট’ক্তি করে কথা বলার জন্যই এমন মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি আমরা মিটমাট করার চেষ্টা করছি।

প্রত্যক্ষদর্শী জোবায়েদ হোসেন, আতিকুর হাসান ও রাজ্জাক জানান কোমল ও তার ছেলে শাকিলসহ ওই সন্ত্রাসী বাহিনীরা সিনেমা স্টাইলে হাতে লাঠি, রড, হাসুয়া নিয়ে অন্যায় ভাবে জালালকে মারপিট করেছে। তারা সবাই দীর্ঘদিন যাবত মাদকের কারবারসহ নানা রকমের অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন রকমের কথা কিংবা বাধা দিতে গেলেই এরকমের মারপিট করে এবং বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকী দিয়ে আসছে।

তারা আরো বলেন প্রশাসনকে জানিয়েও তেমন কোন লাভ হয় না। কোমল মাদকসহ একাধিকবার ধরা পড়ে জেল হাজত খেটেছে। জেল থেকে বের হয়েই কোমল ও তার বাহিনী মাদকের কারবারসহ এই ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এছাড়াও তারা এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড দীর্ঘদিন যাবত করে আসছে। ওদের জ্বালাই এই এলাকার মানুষরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তর মূলক দীর্ঘ শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এরা এলাকারা শান্তি ও শৃঙ্খলা নষ্ট করেই আসবে।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।