করোনা আক্রান্ত সাংসদের সংস্পর্শে আসা এমপি, ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুরোধ স্বাস্থ্য বিভাগের

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২০

নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের সংস্পর্ষে আসা দুই সংসদ সদস্য, ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জন ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

তারা হলেন, নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম, নওগাঁ-৩ (বদলগাছি-মহাদেবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার, জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশিদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া, সিভিল সার্জন ডা: আ. ম. আখতারুজ্জামান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল মালেক।

ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মনজুর এ-মুর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৭এপ্রিল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার জন্যে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকার, এমপি ইসরাফিল আলম, এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার, জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশিদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া, সিভিল সার্জন ডা: আ. ম. আখতারুজ্জামান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল মালেকসহ অন্যান্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অংশগ্রহন করেন। ভিডিও কনফারেন্সে শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বসে চলতি বোরো ধান কাটা মাড়াইসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর গত মঙ্গলবার ঢাকা চলে যান এমপি শহীদুজ্জামান সরকার। ঢাকায় শুক্রবার এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এরপরই শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই ভিডিও কনফারেন্সেসহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তার সংস্পর্ষে আসা দুইজন এমপি, ডিসি, এসপি, সিএস ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে হোমকোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সোমবার সকালে ওই ছয় জনের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও একই দিন ২৭এপ্রিল সোমবার পুলিশ লাইনস ড্রিল সেডে আতœসমর্পণকারী ৭৩জন চরমপন্থীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নগদ আর্থিক অনুদান বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নওগাঁ-৬ আসনের এমপি ইসরাফিল আলম। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া, এনএসআই এর যুগ্ম পরিচালক জহির উদ্দীন, পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা-কর্মচারী জেলার গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, ২৯ এপ্রিল রাণীনগর উপজেলার বিল পালশা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও তথ্য গোপন করে তার একদিনের শিশু সন্তানকে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: রতন কুমার সিংহের কাছে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরপর থেকে ওই চিকিৎসককেও গত বৃহস্পতিবার থেকে হোম কোয়ারেন্টাইয়ে রাখা হয়েছে এবং তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এখনও তার রিপোর্ট পাওয়া যায় নাই।

ডেপুটি সিভিল সার্জন আরও জানান, এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আমাদের সংস্পর্ষে অন্যদেরও পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। আজ পর্যন্ত এই জেলা থেকে মোট ১৩০২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে ৫৭৬জনের। এর মধ্যে ১৭ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। জেলায় ১৩৬৭ জনের হোম কোয়ারেন্টিনে এবং ৩৫ জনকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারাইটেনে আছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৫২ জনকে হোম কোরাইটেনে রাখা হয়েছিল এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৮৫জন বলেও জানান তিনি।

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ইসরাফিল আলম বলেন এখন পর্যন্ত আমার শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা যায়নি। তবুও আমি নিজের ও আমার আশেপাশের মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ঘরে বসেই সকল কাজকর্ম সম্পন্ন করছি। অতিব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের হচ্ছি না এবং কাউকে আমার সঙ্গে দেখা করতেও দিচ্ছি না। করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে এবং পরিবারসহ আশেপাশের মানুষের কথা চিন্তা করে আমাদের সবাইকে অবশ্যই করনীয় বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে মেনে চলা উচিত।